রাজশাহীতে নিজের ভ্যানে করে মেয়ে হোসনেয়ারা খাতুনের (১৬) মরদেহ প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরের থানায় নিয়ে যান ভ্যানচালক আবদুল মালেক। তার অভিযোগ, যৌতুক হিসেবে মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ায় তার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন জামাই রানা ইসলাম।

সোমবার (১৮ জুলাই) বাগমারা উপজেলার বীরকুৎসা গ্রামের মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশের নির্দেশে রাত সাড়ে ১১টার দিকে মেয়ের মরদেহ থানায় পৌঁছে দেন আবদুল মালেক।

মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। পরে দুপুরের দিকে মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। এ ঘটনায় রানা ইসলাম ও তার মা-বাবাকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন আবদুল মালেক।

বাগমারা উপজেলার যোগিপাড়া ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা ভ্যানচালক আবদুল মালেকের অভিযোগ, মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ায় তার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন মেয়েজামাই রানা ইসলাম। পরে এ ঘটনাকে ‘আত্মহত্যা’ বলে প্রচার করা হয়। শেষে ঘরের বারান্দায় মরদেহ ফেলে রানা ও তার মা-বাবা পালিয়ে যান।

পুলিশ সূত্র জানায়, সাত মাস আগে পাশের বীরকুৎসা গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে রানা ইসলামের সঙ্গে কিশোরী হোসনেয়ারা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের আগে রানা ও হোসনেয়ারা একে অপরকে পছন্দ করতেন। কিন্তু বিয়ের পর তিক্ততা শুরু হয়। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শুরু হয় মনোমালিন্য।

তবে হোসনেয়ারার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি, পারিবারিক অশান্তির কারণে হোসনেয়ারা গলায় ফাঁস নিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। কিন্তু হোসনেয়ারার পরিবারের দাবি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ নিয়ে জটিলতা তৈরি হলে মরদেহে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করতে সময় লেগে যায় পুলিশের।

মরদেহ কেন বাবাকে আনতে হলো, এ প্রশ্নে বাগমারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তৌহিদুর রহমান জানান, কোনো বাহন না পাওয়ায় রাতে নিহত গৃহবধূর বাবার ভ্যানে করে মরদেহ থানায় আনা হয়। আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে থানায় বাদী হয়ে মামলা করেছেন নিহত মেয়ের বাবা। এ নিয়ে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেও জানান তিনি।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এনএ