চার মাসের ছুটি নিয়ে ছয় বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার নাজমা খাতুন নামে এক প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিভাগীয় শিক্ষা অধিদপ্তর। তিনি উপজেলার মর্ণেয়া ইউনিয়নের লাখেরাজটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার পরও সরকারি চাকরিতে বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি।

কারণ দর্শানোল ওই নোটিশটি গত ২৬ জুলাই (মঙ্গলবার) শিক্ষক নাজমা খাতুন ই-মেইলে পেয়েছেন। এর পরদিন ওই শিক্ষকের শ্বশুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে সেই চিঠি নিয়ে গেছেন।

এ নিয়ে গত ২২ জুলাই ‘৬ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে, তবুও সরকারি চাকরিতে বহাল’ শিরোনামে ঢাকা পোস্ট একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এর পরে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক নাজমা খাতুনকে কারণ দর্শানোর নোটিশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান শিক্ষা অধিদপ্তর।

এর আগে গত ২০ জুলাই রংপুর বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মুজাহিদুল ইসলামের স্বাক্ষরে কারণ দর্শানোর ওই নোটিশ ইস্যু করা হয়। এতে প্রধান শিক্ষক নাজমা খাতুনকে বিধিমালা অনুযায়ী কেন চাকরি থেকে বরখাস্ত করা বা যথোপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে না, তার জবাব চিঠি প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ব্যক্তিগত শুনানি দিতে ইচ্ছুক হলে তা জবাবে উল্লেখ করার জন্য বলা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে লাখেরাজটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন নাজমা খাতুন। যোগদানের দেড় বছর পর ২০১৬ সালের জুলাই মাসে দুই মাসের ছুটি নিয়ে তিনি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখানে থাকা অবস্থায় তিনি আরও দুই মাসের ছুটি নেন। অভিযোগ রয়েছে, তার ছুটি শেষ হলেও তিনি বিদ্যালয়ে আসেননি এবং ছুটিও নেননি। দীর্ঘদিন ধরে বিনা ছুটিতে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও তিনি চাকরিতে বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসে অবগত করা হলেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা চাকরির বিধিমালা অনুযায়ী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।    

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাগমা সিলভিয়া খান বলেন, কারণ দর্শানোর ওই নোটিশটি ২৬ জুলাই ইমেইলে ওই শিক্ষক পেয়েছেন। এর পর আমরা নাজমা খাতুনের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। পরদিন তার শ্বশুর আজিজুল ইসলাম অফিসে এসে সেই চিঠি নিয়ে গেছেন।  

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই