সরকার জনস্বার্থের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে
জ্বালানি তেল ও ইউরিয়া সারের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে রংপুরে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে বিভিন্ন সংগঠন। রোববার (৭ আগস্ট) দুপুরে রংপুর প্রেস ক্লাব চত্বরের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে জ্বালানি তেল ও ইউরিয়া সারের মূল্যবৃদ্ধির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। একই সঙ্গে জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে সারা দেশের শিল্প ও কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন সংগঠকরা।
দুপুরে রংপুর প্রেস ক্লাব চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল- বাসদ রংপুুর জেলা শাখা।
বিজ্ঞাপন
এতে কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য ও জেলার আহ্বায়ক কমরেড আব্দুল কুদ্দুস সভাপতির বক্তব্যে বলেন, অস্বাভাবিকভাবে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ওপর প্রভাব পড়ায় মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। সঙ্গে ইউরিয়া সারের দাম কেজিপ্রতি ৬ টাকা বৃদ্ধির কারণে কৃষকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। অবিলম্বে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রলসহ সব ধরনের জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
এ ছাড়া সমাবেশে বক্তব্য দেন, বাসদ রংপুর জেলার সদস্য সচিব মমিনুল ইসলাম, কৃষক ও ক্ষেতমজুর ফ্রন্টের জেলা আহ্বায়ক অমল কুমার সরকার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট রংপুুর মহানগর শাখার সভাপতি যুগেশ ত্রিপুরা প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখা যাবে না, উৎপাদন বাড়াতে হবে। তার এই বক্তব্যের সঙ্গে তেল ও সারের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। যেখানে কৃষিতে ভর্তুকি বাড়ানো উচিত, তা না করে এই মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা সারা দেশের শিল্প ও কৃষি উৎপাদন ব্যাহত করবে, খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলবে।
সমাবেশ থেকে অবিলম্বে এই অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে জনসাধারণকে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান বাসদ নেতারা। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এর আগে বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরে প্রেস ক্লাব চত্বরে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিসহ নিত্যপণ্যের লাগামহীন বাজার সিণ্ডিকেটে সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরে সমালোচনা করেন সংগঠনটির নেতারা।
বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠনের রংপুর জেলার আহ্বায়ক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব আহসানুল আরেফিন তিতু, সদস্য শাহিদুল ইসলাম সুমন, সাজু বাসফোর প্রমূখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, কৃষি আমাদের দেশের মেরুদণ্ড। কৃষি ব্যবস্থাকে বাঁচাতে যেখানে সরকারের উচিত সর্বোচ্চ ভর্তুকি দেওয়া, সেখানে সরকার ইউরিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ সারে প্রতিকেজিতে ৬ টাকা বৃদ্ধি করেছে। এতে ফসলের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে, কৃষক সংকটে পড়বে।
তারা আরও বলেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম যখন নিম্নমুখী সেই সময়ে আমাদের সরকার তেলের দাম বাড়িয়েছে। বিশেষ করে ডিজেলের দাম বৃদ্ধি করে সরকার জনস্বার্থের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। সরকারের সীমাহীন লুটপাটের দায় জনগণের ওপর চাপিয়েছে দেওয়া হচ্ছে। সমাবেশ থেকে অবিলম্বে ইউরিয়া সার ও জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করে কৃষি ও কৃষককে বাঁচানোর জোর দাবি জানানো হয়।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই