লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগ নেতা মো. রুবেলকে (২৫) গলা কেটে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় অভিযুক্ত ১৭ ব্যক্তিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।

এদিকে হত্যা মামলায় সব আসামি খালাস পাওয়ায় স্থানীয়ভাবে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। তাহলে রুবেলকে কে হত্যা করেছে, এ প্রশ্নের জবাব খুঁজছেন নিহতের স্বজনরা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বলেন, রুবেল হত্যা মামলার অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আদালত খালাস দিয়েছেন। রুবেলকে হত্যা করতে সাক্ষীদের কেউ দেখেননি। আসামিদের বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষীই কোনো ধরনের অভিযোগ করেননি।

নিহত রুবেল সদর উপজেলার দত্তপাড়া গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে। তিনি দত্তপাড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রুবেল দক্ষিণ মান্দারী গ্রামে বড় বোন লাইলী আক্তারের বাড়িতে ছিলেন। সেদিন দুপুরের দিকে কে বা কারা তাকে মোবাইল ফোনে ডেকে নেয়। পরে রাতে গলা কেটে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে। পরদিন সকালে দত্তপাড়ার বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে বরপাড়ার মোহাম্মদ আলীর বাড়ির পুকুরের পাশে হাত বাঁধা অবস্থায় তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। তখন তার ব্যবহৃত মোবাইলটি পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনার ২১ দিন পর নিহত রুবেলের মা নয়ন বেগম বাদী হয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী প্রধান মাসুম বিল্লাহ ওরফে লাদেন মাসুমসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৬ জনকে আসামি করে চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা করেন।

দত্তপাড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম ২০১৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর লাদেন মাসুমসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর মধ্যে মো. জসিম ও মো. ইউসুফ মৃত হওয়ায় মামলা থেকে তাদের অব্যাহতি চেয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর সন্ত্রাসী বাহিনীর মধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মামলার অন্যতম আসামি লাদেন মাসুম মারা যান।

অন্য আসামিরা হলেন কামরুল বেগম, মুরাদ হোসেন, মাসুদ রানা, নিশাদ আলম, মো. সোহাগ, মোরশেদ আলম, মো. নাছির প্রকাশ কানা নাছির, মো. সোহাগ, রিয়াজ হোসেন, ফরহাদ হোসেন, আমির হোসেন সুমন, মো. বাহার, মো. রাকিব, কামাল হোসেন, মুরাদ হোসেন ও সাদ্দাম হোসেন।

দীর্ঘ শুনানি ও ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের আসামিরা দোষী প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস দেন। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম ভুলু বলেন, হত্যা মামলায় সব আসামি খালাস পাওয়ার ঘটনা আমাদের ব্যথিত করেছে। তাহলে রুবেলকে কারা হত্যা করেছে, সেই সমাধানও হওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এনএ