কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তিন মাদরাসা শিক্ষকসহ পাঁচজনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বুধবার (২৪ আগস্ট) রাত ১১টা থেকে ১টার মধ্যে উপজেলার যদুবয়রা, পান্টি, বাগুলাট ও জগন্নাথপুর ইউনিয়ন এলাকা থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) কুমারখালী থানায় অভিযোগ করেছেন দুই ভুক্তভোগীর স্বজনরা। 

ভুক্তভোগীরা হলেন- উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম গ্রামের মৃত সালাউদ্দিনের ছেলে ও বাঁশগ্রাম কামিল মাদরাসার শিক্ষক মো. আইয়ুব আলী (৩৫), পান্টি ইউনিয়নের ওয়াসী গ্রামের মৃত লিয়াকত আলীর ছেলে ও শহীদ নগর শৈলকুপা মাদরাসার কম্পিউটার শিক্ষক মো. মোস্তফা রাশেদ পান্না (৪৭), যদুবয়রা ইউনিয়নেরর বহলবাড়িয়া গ্রামের মো. আলতাফ হোসেনের ছেলে ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদভিত্তিক শিশুশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষক মো. হাফিজুর রহমান (২৬), জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বেতবাড়িয়া গ্রামের মো. আব্দুল জলিলের ছেলে মো. হাসান আলী (৩৫) এবং  মহেন্দ্রপুর গ্রামের মৃত আমজেদ আলীর ছেলে মো. হান্নান (৩০)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই পাঁচজন এসবিএসএল নামে একটি অনলাইন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই ব্যবসায় তাদের বস ছিলেন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের গোবরা গ্রামের মো. তফসের হোসেনের ছেলে মো. ইমরান হোসেন (তুষার)। তুষারের কার্যালয় ছিল পান্টি বাজার এলাকার নৌশের মোড়ে। প্রায় ছয় মাস আগ এসবিএসএল কোম্পানি গ্রাহকের টাকা নিয়ে হওয়া হয়ে যায়। সেই থেকে তুষার পলাতক রয়েছেন।

এ বিষয়ে নিখোঁজ হাফিজুরের চাচা তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, বুধবার রাত ১১টার দিকে ১০ থেকে ১২ জন লোক বাড়িতে এসে হাফিজকে ডাক দেয়। হাফিজ বাইরে আসলে তারা ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয় এবং তাকে তুলে নিয়ে যায়। এখনও সন্ধান পাইনি ভাতিজার। থানায় জিডি আকারে অভিযোগ দিয়েছি।

নিখোঁজ আইয়ুব আলীর স্বজন ও বাগুলাট ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার (সদস্য) তারেক আজিজ টিক্কা বলেন, বুধবার রাতে প্রশাসনের পরিচয় দিয়ে আইয়ুবকে তুলে নিয়ে গেছে। কুমারখালী থানায় খোঁজ নিয়েও কিছু জানতে পারিনি। পরে থানায় জিডি করেছি।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, হেডকোয়ার্টার সূত্রে জানতে পেরেছি রাতে র‍্যাবের একটি টিম অভিযান চালিয়েছে। 

কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন বলেন, কুমারখালীতে এ রকম কোনো অভিযান চালানো হয়নি, কাউকে আটক করাও হয়নি। 

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, বুধবার রাতে ডিবি পুলিশ কোনো অভিযান চালায়নি। জিডির সূত্র ধরে নিখোঁজদের পুলিশ খোঁজাখুঁজি করছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

রাজু আহমেদ/আরএআর