পূর্ব শত্রুতার জের ধরে নরসিংদীতে সাবেক ইউপি সদস্য সুজিত সূত্রধরকে (৫৩) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় হাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইফসুফ খান পিন্টুর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার (০৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারক মোস্তাক আহাম্মেদের আদালতে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

এদিকে জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর এজলাস থেকে বের হয়েই মামলার বাদী নিহতের ছেলে সুজন সূত্রধরকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই মনিরুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত ইউসুফ খান পিন্টু হাজিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান হাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান। ২০০৬ সালে হাজিপুর ইউনিয়নের তৎকালীন বিএনপির চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সরকার ও তার ভাই রিপন সরকারকে প্রকাশ্যে নিহতের বাড়ির সামনে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে পিন্টু ও তার সমর্থকরা। জোড়া হত্যা মামলার ঘটনায় ইউসুফ খান পিন্টুর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।
 
আদালত সূত্রে জানা যায়, নিহত সুজিত সূত্রধর ইউপি সদস্য থাকাকালীন পরিষদের চাল ও গম বিতরণের অনিয়মসহ নানা বিষয়ে হাজিপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পিন্টুর সঙ্গে বিরোধ ছিল। বিরোধের জের ধরে পিন্টু চেয়ারম্যানের নামে একাধিক মামলা করেন নিহত সুজিত সূত্রধর। মামলার জের ধরে সুজিতের ওপর একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে গত ২২ জুন বুধবার সন্ধ্যার পর ইউপি সদস্য সুজিত সূত্রধর বাড়ি থেকে হাজিপুর কাঠবাজারের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যান। দোকানে ছেলের সঙ্গে ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করেন। 

রাত ৮টার দিকে পিন্টুর ভাই মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র নিয়ে সাবেক ইউপি সদস্য সুজিত সূত্রধরের ওপর হামলা চালায়। ওই সময় সন্ত্রাসীরা সুজিতকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। ওই সময় নিহতের ছেলে সুজন সূত্রধর ও দোকানের কর্মচারীরা তাদের বাধা দিতে এগিয়ে গেলে তাদেরও পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে আহত সুজিত উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় হাজিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইফসুফ খান পিন্টুকে প্রধান আসামি করে ১৬ জনের নামে হত্যা মামলা করেন  নিহতের ছেলে সুজন সূত্রধর। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার অভিযুক্তরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আগাম জামিন নিতে আসেন। বেলা ১১টার দিকে বিচারক মোস্তাক আহাম্মেদের আদালতে আসামিরা জামিনের আবেদন করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে অভিযুক্ত হাজিপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ইফসুফ খান পিন্টু ও তার ভাই মনিরুজ্জামান খানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মামলার বাদী নিহতের ছেলে সুজন সূত্রধর জানিয়েছেন, জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর এজলাস থেকে বের হয়েই ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই মনিরুজ্জামান খান আমাকে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দিয়েছেন। একইসঙ্গে বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়াসহ আমাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেন। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীরা ছবি তুলতে গেলে তাদেরকেও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।

কোর্ট ইন্সপেক্টর দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ইউপি সদস্য হত্যা মামলায় চেয়ারম্যানসহ দুইজন আগাম জামিনের আবেদন করেন। বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।  

এসপি