মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর (বীর উত্তম)

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর (বীর উত্তম) বলেছেন, আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করতে হবে। আওয়ামী লীগ জনগণের ম্যান্ডেটে কখনও ক্ষমতায় আসতে পারেনি। বিনা ভোটে, বিনা পরিশ্রমে আওয়ামী লীগ এমপি বানিয়েছে। আমরা জানি এমপি-মেয়র হতে হলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ জনগণের খেদমত করতে হয়। এরপর যদি একটা সিট পাওয়া যায়। একটা সিট জনগণের খেদমত করে আসে। আর এরা জনগণের কাছে যায় না।  

শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে খুলনা মহানগরীর কেডি ঘোষ রোডের বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ, খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি যৌথভাবে এ মহাসমাবেশের আয়োজন করে।  

শাহজাহান ওমর বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বীর উত্তম খেতাব জিয়াউর রহমানের অর্জন, এই অর্জন কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই। জিয়াউর রহমানের সমাধি উঠানোর চেষ্টা বহুবার হয়েছে। কিন্তু আপনাদের সংগ্রামে সেটি করা সম্ভব হয়নি। আওয়ামী লীগ পারলে এটিও বলবে জিয়াউর রহমান এদেশের নাগরিক নয়। 

তিনি বলেন, ব্যাংক থেকে অর্থ লুট হচ্ছে। বিদেশে অর্থ পাচার হচ্ছে। এসব প্রতিরোধে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, খুলনার মহাসমাবেশে কর্মীদের আসতে পথে পথে বাধা দেওয়া হয়েছে। তারপরও হাজার হাজার জনতা সমাবেশে উপস্থিত হয়ে সরকার পতনের ডাক দিয়েছে। এ বছরই সরকারের শেষ সময়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির আরেক ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। ১৬ কোটি মানুষ ভোট দিতে পারে না। রাতের অন্ধকারে জনগণের ভোট ছিনিয়ে নিয়ে এমপি বানানো হয়। 

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, সমাবেশ পণ্ড করার জন্য পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়েছে এবং দুদিনে ৩১ জন কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের খাবার হোটেলে পুলিশ তালা দিয়েছে। খেয়াঘাট-বাস বন্ধ করে দিয়েছে। তবুও আজকের এই সমাবেশ সফল ও সার্থক হয়েছে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মশিউর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মুজিবর রহমান সরোয়ার, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, গত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাৎ হোসেন, গত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, গত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আওয়াল, কেন্দ্রীয় নেতা আমিরুজ্জামান খান শিমুল, সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদী রুমি, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক সোহরাব উদ্দীন, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ। 

সমাবেশ সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমীর এজাজ খান, নগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, জেলা শাখার শেখ আবু হোসেন বাবু ও মহানগর শাখার আসাদুজ্জামান মুরাদ।

এর আগে সকাল থেকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিও বাড়তে থাকে। বিএনপির দাবি অনুযায়ী চারটি স্পটে অনুমতি না মেলায় দলীয় কার্যালয়ের সামনেই সমাবেশের জন্য অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়। বিশৃঙ্খলা রোধে কেডি ঘোষ রোড, থানা মোড় এলাকাসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করে প্রশাসন। 

মোহাম্মদ মিলন/আরএআর