বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যলয়ে (বুয়েট) ভর্তি হয়েও অর্থাভাবে পড়াশোনা অনিশ্চিত ভ্যানচালকের ছেলে মো. এনামুল হকের দায়িত্ব নিয়েছেন কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মাসুম মুর্শেদ শান্ত। বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এনামুলের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন তিনি। 

এ সময় এনামুলকে বুয়েটে পড়াশোনার খরচ হিসেবে প্রতি মাসে তাকে ১০ হাজার টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন এবং আজ তার হাতে ১০ হাজার টাকা তুলে দেন শান্ত। এতে এনামুলের পরিবারে আনন্দের জোয়ার বইছে।

এনামুল হক কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের বেলগাছি গ্রামের ভ্যানচালক ইসরাইল হোসেনের ছেলে। তিনি বুয়েটের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এসএসসি ও এইচএসসিতেও বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেন এনামুল। বুয়েটে পড়ার সুযোগ পেয়েও টাকার অভাবে অনিশ্চয়তায় পড়েন তিনি।

বুধবার দুপুরে জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে ‘টাকার অভাবে বুয়েটে পড়াশোনা অনিশ্চিত ভ্যানচালকের ছেলের’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিষয়টি জানতে পেরে আওয়ামী লীগ নেতা শান্ত এনামুলের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন এবং আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন। 

এনামুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া যে আমি বুয়েটে পড়ার সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু ভ্যানচালক বাবা গরিব হওয়ায় লেখাপড়া চালিয়ে নেওয়ার সামর্থ্য নেই। তবে পড়ালেখা চালিয়ে নিতে সহযোগিতা করেছেন এবং আগামীতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা শান্ত। তিনি অনেক ভালো মানুষ। আমি সবার কাছে দোয়া চাই, যেন লেখাপড়া শেষ করে ভালো ইঞ্জিনিয়ার  হতে পারি। 

এনামুলের বাবা ভ্যানচালক ইসরাইল হোসেন বলেন, আমি গরিব মানুষ। খুব কষ্ট করে আমার ছেলে এনামুল এ পর্যন্ত পৌঁছেছে। কখনো খাবার জুটেছে, কখনো পোশাক-বই-খাতা জোটেনি। আমি ভ্যান চালাই। অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্যেও এনামুলকে উৎসাহ দিয়েছি। আমি বহু কষ্ট করে তাকে পড়িয়েছি। মেয়েটাও খুব মেধাবী ছিল, কিন্তু টাকার অভাবে তার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। বিয়ে দিয়ে দিছি।

তিনি আরও বলেন, আল্লাহর রহমতে আমার ছেলে বুয়েটে চান্স পেয়েছে। কিন্তু তাকে ভর্তি করার মতো টাকা আমাদের নেই। এনামুলের পড়ালেখা কীভাবে করাব এসব নিয়ে চিন্তা করে কোনো কূল-কিনারা পাচ্ছিলাম না। কিন্তু আজ খোকসার আওয়ামী লীগ নেতা শান্তর সঙ্গে সরাসরি কথা হয়েছে। তিনি এনামুলের পড়াশোনা চালিয়ে নিতে সার্বিক সহযোগিতা করবেন। বিপদের সময় পাশে থাকার জন্য আমরা খুব খুশি। 

খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মাসুম মুর্শেদ শান্ত ঢাকা পোস্টকে বলেন, মানুষের কাজই হচ্ছে বিপদে মানুষের পাশে থাকা। আমি খবর পেয়েছিলাম এনামুল বুয়েটে পড়ালেখার সুযোগ পেয়েও অর্থের অভাবে তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। খবরটি পাওয়ার পর এনামুলের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি সার্বিকভাবে সহযোগিতা করব, কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে। আমি প্রতি মাসে তাকে ১০ হাজার করে টাকা দিব। 

রাজু আহমেদ/আরএআর