জাতীয় সংসদের উপনেতা, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছেন নগরকান্দাবাসী। রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা ৪০ মিনিটে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

এর আগে ২০০৭ সালের ২১ মার্চ বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমান মারা যান। তারা দুজনই ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।

জানা গেছে, ফরিদপুর-২ সংসদীয় আসনটি নগরকান্দা ও সালথা উপজেলা ও পাশের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এই আসনে স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব কে এম ওবায়দুর রহমান। রাজনীতির মাঠে তার চির প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। মূলত দুজনই ছিলেন এলাকার মানুষের জন্য নিবেদিতপ্রাণ।

এলাকার রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজের উন্নয়নসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নে দুজনেই রেখেছেন অনন্য ভূমিকা। এলাকার রাজনীতিতে দুজন ছিলেন অভিভাবকতুল্য। কে এম ওবায়দুর রহমানের মৃত্যুর পর নগরকান্দাবাসীকে আগলে রেখেছিলেন সাজেদা চৌধুরী। তার মৃত্যুতে অভিভাবকহীন হয়ে পড়ল নগরকান্দাবাসী।

নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন মিয়া বলেন, সাজেদা চৌধুরী ছিলেন আমাদের মাথার মুকুট। শুধু আওয়ামী পরিমণ্ডলই নয়, অন্যান্য দল-মতের প্রতি তিনি ছিলেন শ্রদ্ধাশীল। অন্যান্য দলের মানুষের কাছেও তার অবস্থান ছিল শ্রদ্ধার। তার মৃত্যুতে আমরা নগরকান্দা-সালথাবাসী অভিভাবক হারালাম। এমন মানুষ আসবে কি না জানি না।

সাজেদা চৌধুরীর জানাজায় অংশ নিতে এসেছিলেন নগরকান্দা উপজেলার রঘুরদিয়া গ্রামের ইসারত মোল্লা (৬২)।তিনি বলেন, সত্যি বলতে আমি সারা জীবন অন্য দলের প্রতিনিধিকে ভোট দিয়েছি। ২০১২ সালে তার ছেলে আয়মন আকবরের মাধ্যমে সাজেদা চৌধুরীর কাছে একটি দাবি নিয়ে গিয়েছিলাম। সেদিন আমি কোন দল করি সেটি দেখেননি সাজেদা চৌধুরী। তিনি আমার কাজটি করে দিয়েছিলেন। এই যুগে তো দলের মানুষই দলের মানুষের উপকার টাকা ছাড়া করেন না। সেখানে আমি অন্য দলের জেনেও তিনি আমার কাজটি করে দিয়েছিলেন। এই হলো সাজেদা চৌধুরী।

হারুন-অর রশিদ (৪৬) নামে এক ভ্যানচালক বলেন, আমাদের সুখ-দুঃখের কথা ওবায়দুর রহমানকে বলতে পারতাম।সাজেদা চৌধুরীও ছিলেন আমাদের মতো গরিবের নেতা। তিনি মারা গেলেন। জানি না এমন নেতা আমরা আর পাব কি না।

জহির হোসেন/এসপি