বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের দায় মেনে নিয়ে পরিশোধের আশ্বাসে পুনরায় সংযোগ দিয়েছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো)।

বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বরিশাল ক্লাব মিলনায়তনে বিভাগীয় কমিশনারের মধ্যস্থতায় টানা দেড় ঘণ্টার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। এ সময়ে প্রতি মাসের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ ও বকেয়া বিল পর্যায়ক্রমে পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র, ওজোপাডিকোর কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসান। বৈঠক শেষে তারা সাংবাদিকদের পুরো বিষয়টি তুলে ধরেন।

মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, আমাদের সব কিছুই সমাধান হয়েছে। যে কারণেই হোক একটি ঘটনা ঘটেছিল। জনগণের স্বার্থে আমরা সকলে বসে একমত হয়েছি। ভোগান্তি থেকে মানুষ পরিত্রাণ পেয়েছেন—এটিই মুখ্য বিষয়। যেহেতু সিটি করপোরেশনের মেয়র আমি সেহেতু এর দায়-দায়িত্ব আমার ওপরে বর্তায়। কারো ওপর অজুহাত দিয়ে লাভ নেই। আমরা প্রতি মাসের বিল প্রতি মাসে পরিশোধ করব। আর কোনো বিদ্যুৎ বিল যেন বকেয়া না থাকে সেই চেষ্টা করব।

বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসান বলেন, তেমন বড় কোনো সমস্যা হয়নি। সামান্য কিছু বকেয়া ছিল—বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকলে বিদ্যুৎ বিভাগেরও একটি প্রটোকল আছে। সে কারণে একটু... ওজোপাডিকোর ঢাকা ও খুলনা থেকে কর্মকর্তারা এখানে এসেছেন। সকলের উপস্থিতিতে আলোচনার মাধ্যমে সব সমাধান হয়ে গেছে। এখন আর কোনো সমস্যা নেই।

তবে ওজোপাডিকোর কোনো কর্মকর্তা বক্তব্য দেননি। বৈঠকে বসার আগে রাত ৮টার দিকে বরিশাল নগরীর সকল সড়কের বিদ্যুৎ সংযোগ যুক্ত করা হয়।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর করা সংবাদ সম্মেলনের পরের দিন এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো। ওই দিনের সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাকে স্থানীয় রাজনীতির প্রতিপক্ষ গ্রুপের ষড়যন্ত্র বলে ইঙ্গিত দেন। মেয়র বলেছিলেন, প্রায়াত দুই মেয়রের রেখে যাওয়া বকেয়া বিল তিনি (সাদিক আব্দুল্লাহ) পরিশোধ করবেন না। এছাড়াও প্রশ্ন তোলেন দেশের অন্যান্য অর্থনৈতিক সামর্থবান করপোরেশনের শতকোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকলেও সেগুলোর সংযোগ ছিন্ন করা হয়নি। তিনি সাধ্যমতো বিল পরিশোধনের পরও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। আর ১৫ সেপ্টেম্বর লাইভে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকার প্রসঙ্গ টেনে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিতে ওজোপাডিকোকে জানান বলেও অবহিত করেন।

যদিও ওজোপাডিকো বরিশাল বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এটিএম তারিকুল ইসলাম শুরু থেকেই বলেছিলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ১৫টি সড়কের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। বাকি সড়কের সংযোগ তারা বিচ্ছিন্ন করেননি। সিটি করপোরেশন থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে। এছাড়া পানির পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়নি।

তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের কাছে ১১২টি হিসেবের অনুকূলে মোট ৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ১৬ হাজার ৯৪৩ টাকা পাওনা রয়েছে। আমরা তাদের বারবার নোটিশ দিয়েছি। কিন্তু তারা আমলে নেননি।

সহকারী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের শেষ সময় ছিল ১৮ সেপ্টেম্বর। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিল পরিশোধ না করায় ওই দিন বিকেল ৪টা থেকে অভিযান চালিয়ে প্রথম দিন ৭টি এবং তারপরের দিন ৮টি সড়কের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/ওএফ