অসহায় সুফিয়া বেগম

আগুনে পুড়ে গেছে বসতঘর। এখন বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করে জীবন পার করছেন। কোথাও ঠাঁই পাচ্ছেন না তিনি। কারণ, জীবনের অন্তিম সময়ে বিপর্যয় নেমে এসেছে। সুফিয়া বেগমের যেন ঘর পোড়েনি, জীবনটাই পুড়ে গেছে আগুনে।

বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগে শেষ আশ্রয়স্থল ঘরটা ছাই হয়ে গেছে সুফিয়ার। মুহূর্তে আগুনের লেলিহান শিখায় ঘরের সবকিছু পুড়ে তিনি এখন নিঃস্ব।

মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের পশ্চিম খলাগ্রামে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে ১০ দিন ধরে অন্যের বাড়িতে রাত যাপন করছেন সুফিয়া। বার্ধক্যজনিত নানা রোগের কারণে তিনি কাজ করতে না পারায় জীবন বাঁচানোর তাগিদে বাধ্য হয়ে মানুষের কাছে হাত পাতছেন। তার ১৫ বছর বয়সী এক ছেলে ট্রাকের সহকারীর কাজ করেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সুফিয়া বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিদ্যুতের আগুনে ছাই হয়ে গেছে সবকিছু। পরনের কাপড় ছাড়া কিছুই নেই আর।

পুড়ে যাওয়া ঘর

প্রায় ২৫ বছর আগে একই উপজেলার মেদিনি মহল এলাকার হামদু মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় সুফিয়ার। এর আগে আরেকটি বিয়ে করেছিলেন সুফিয়ার স্বামী হামদু। তিন বছর ধরে হামদু মিয়া সুফিয়াকে ছেড়ে চলে যান। এরপর থেকে কোনো খবর রাখেন না সুফিয়ার। বাড়ির পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দোকান ও বাজারে পানি বহনের কাজ করে কোনো রকম চালাতেন সংসার। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডে আজ একেবারেই নিঃস্ব।

স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, সুফিয়ার কোনো জায়গা-সম্পত্তি না থাকায় আবদুল বাছিতের বাড়িতে আশ্রিত থাকতেন সুফিয়া। এটা পুড়ে যাওয়ায় এখন আর তার মাথা গোঁজার কিছুই নেই।

এ বিষয়ে মুন্সিবাজার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সালেক মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সহায়তায় সুফিয়ার জন্য একটি বাড়ির ব্যবস্থা করা হবে।

রাজনগর ইউএনও প্রিয়াঙ্কা পাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। প্রাথমিকভাবে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছি। পরবর্তী সময়ে জায়গা পাওয়া গেলে একটি বাড়ির ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

ওমর ফারুক নাঈম/এনএ