শরীয়তপুরের জাজিরার মা ইলিশ রক্ষা অভিযান পরিচালনাকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান সোহেলের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ৯ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। ১০ জেলেকে আটক করা হয়েছে। 

শনিবার (৮ অক্টোবর) বিকেল থেকে জাজিরার পদ্মা নদীতে মা ইলিশ রক্ষায় ভ্রামমাণ আদালতের একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে। রাতে হামলার ঘটনা ঘটে। 

অভিযানে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুল হাসান সোহেল, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল বাশার, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জামাল হোসেন ও মাঝিরঘাট নৌ পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তা মো. জহিরুল হক ফোর্স নিয়ে উপস্থিত ছিলেন।

আটককৃতরা হলেন- বড় নওপাড়া এলাকার দবির আকনের ছেলে রিয়াদ (২২), আব্দুল বেপারি কান্দির করিম মালতের ছেলে আক্কাস মালত (৪০), একই এলাকার মোকলেছের ছেলে মোক্তার মিয়া (২০),  আক্কাস মোড়লের ছেলে রাজিব মিয়া (২৮), পাইনপাড়া এলাকার নুরুল হকের ছেলে দ্বীন ইসলাম (৪২), বড়কান্দি এলাকার ফজলের ছেলে শানোয়ার (২০), মোহর আলী মাদবর কান্দি এলাকার হান্নান ফকিরের ছেলে সুজাত ফকির (২০) ও একই এলাকার আব্দুল হান্নান ফকিরের ছেলে বাবুল ফকির (৪০), বাউদিয়া এলাকার মালেক বেপারীর ছেলে শাকিল (১৯) ও ধোলাইপাড় এলাকার কাশেম সরকারের ছেলে মনির হোসেন (২৬)।

অন্যদিকে অভিযানের মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত দুটি ট্রলার জব্দ ও দুই লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাতে উপজেলার পাইনপাড়া মাঝিরচর এলাকার হাই ভোল্টেজ বিদ্যুতের পিলার সংলগ্ন চরে বেশ কিছু জেলে সংঘবদ্ধভাবে প্রশাসনের ওপর হামলা করে। চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় জেলেরা তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ও দেশীয় অস্ত্র টেঁটা ছোড়েন। অবস্থা বেগতিক দেখে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা থেকে অতিরিক্ত ফোর্স আনা হয় অভিযানের জন্য। এ সময় হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ৯ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ। সেখান থেকে ১০ জনকে আটক করা হয়। এর মধ্যে একজনকে দুই মাস ও ৯ জনকে এক মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। জব্দকৃত জাল পুড়িয়ে ধ্বংস ও আটককৃত ট্রলারগুলো বাজেয়াপ্ত করা হয়।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল বাশার ঢাকা পোস্টকে বলেন, পদ্মা নদীতে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কিছু জেলে মাছ ধরছিলেন। এ সময় ইউএনওর নেতৃত্বে আমরা পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান চালাই। রাতে পাইনপাড়া এলাকায় আমাদের ওপর হামলা করেন জেলেরা।

মাঝিরঘাট নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) জহিরুল হক বলেন, অভিযান পরিচালনার সময় এক দল জেলে হামলা চালায়। এ ঘটনায় ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন। আজ তাদের কারাগারে পাঠানো হবে।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে জাজিরার পদ্মা নদীতে দিনব্যাপী অভিযান চালাই। এতে করে জেলেরা আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ হন। রাতে হঠাৎ করে মাঝ নদীতে তারা ট্রলার নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালান। তখন আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় ১০ জেলেকে আটক করা হয়।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর