ছিনতাইয়ের শিকার শিশু শরীফুল

নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসভার আনন্দনগরে একটি ভাড়া বাসায় থাকে ১২ বছর বয়সী শিশু শরীফুল। নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সে। 

শরীফুলের বাবা বিপ্লব হোসেন। দুই ভাই ও মা-বাবা নিয়ে চারজনের সংসার তাদের। বাবা অসুস্থ থাকায় কয়েক দিন ধরে আয় নেই। ঘরে বাজার-সদাই ছিল না বলে শনিবার বাবার ভ্যানটি নিয়ে শরীফুল সড়কে নামে।

কিন্তু কপাল মন্দ! ওইদিনই যাত্রীবেশী ছিনতাইকারীরা শরীফুলের গলায় ছুরি ধরে ভ্যানটি নিয়ে যায়। ভ্যান হারিয়ে তার কান্না যেন থামেই না। তবে ছিনতাই হওয়া ভ্যানটি শনিবার রাতেই উদ্ধার করেছে পুলিশ। ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে ভ্যানটি এখনো শরীফুল বা তার বাবার কাছে হস্তান্তর করেনি পুলিশ।

ভ্যান উদ্ধারের বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করে নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহমেদ বলেন, শনিবার রাতে সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর খোলাবাড়িয়া গ্রাম থেকে ভ্যানসহ একজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ভ্যান হারানোর পর শরীফুল জানায়, তার বাবা অতিদরিদ্র। থাকার জন্য তাদের নিজের জায়গা পর্যন্ত নেই। ভাড়া বাড়িতে থাকে। একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে ২৪ হাজার ৫০০ টাকা ঋণ নিয়ে তার বাবা ব্যাটারিচালিত ভ্যানটি কিনেছিলেন মাসে তিনেক আগে। 

ঘটনার দিন গুরুদাসপুর পৌর শহরের চাঁচকৈড় হাটে যাত্রী সেজে দুজন সোনাবাজুতে যাওয়ার জন্য শরীফুলের ভ্যানে ওঠেন। সেখানে পৌঁছানোর পর তারা বলেন তাদের সঙ্গে আরেকজন যাবেন। তাকে নিয়ে পাশের মানিকপুর (বড়াইগ্রাম উপজেলা) যেতে হবে। এ জন্য কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বলেন শরীফুলকে। 

কিছুক্ষণ পর মোটরসাইকেল নিয়ে এক ব্যক্তি আসেন তার ভ্যানের কাছে। এ সময় অনেকটা জোর করে তাকে ভ্যান থেকে নামিয়ে দেয় যাত্রীবেশী দুর্বৃত্তরা। একপর্যায়ে গলায় ছুরি ধরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে বলে তারা। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা ভ্যান নিয়ে চলে যায়। পরে তার চিৎকারে পথচারীরা এগিয়ে আসেন তবে আশপাশে ভ্যানটি আর পাওয়া যায়নি। 

পরে ভ্যানটি উদ্ধার করে দেওয়ার জন্য গুরুদাসপুর থানায় আবেদন জানায় শরীফুল। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই পুলিশ ভ্যানটি উদ্ধার করল। 

তাপস কুমার/আরএইচ