বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, ‘গণতন্ত্র হারিয়ে যাওয়ার জিনিস না, কারো পকেটের মোয়া না। গণতন্ত্র বার বার জীবিত হয়। আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। মঙ্গলবার (২ মার্চ) বিকেলে নগরীর মাদ্রাসামাঠ-সংলগ্ন একটি কনভেনশন সেন্টারে ওই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘আপনি সকালে যখন রাজশাহীতে নামলাম। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাস্তাঘাট যেমন ফাঁকা ছিল, রাজশাহীর অবস্থা ঠিক তেমন দেখলাম। কীসের ভয়! আপনি তো গণতন্ত্র দিয়ে দিয়েছেন। তারপরও কীসের এতো ভয়? তাহলে কি আপনার গণতন্ত্রের ডেফিনেশন পরিবর্তন হয়ে গেল?’

পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ রাতে পুলিশ বাহিনী নিজেদের জীবন বাজি রেখে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। কিন্তু আজ স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে দেখছি, সেই পুলিশ বাহিনী আর আজকের পুলিশ বাহিনীর মধ্যে কোনো মিল নেই। তখনকার পুলিশ বাহিনী ছিল বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের অগ্রসৈনিক। আর আজকের পুলিশ একটা দলের কর্মী বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশে করে টুকু বলেন, ‘আপনি উন্নয়নের কথা বলেন। সেই জন্য তো ফরিদপুরের এক ছাত্রলীগ নেতা ২ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। এক ছাত্রলীগ নেতার যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে রাঘববোয়ালরা কত টাকা পাচার করেছে? বাংলাদেশের মানুষ সেই হিসাব চায়।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, ‘রাজশাহীর এই মাটি থেকেই বায়ান্ন’র ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়। এই মাটি থেকেই ৬২’র আন্দোলন শুরু হয়। ছাত্রদের ওপর গুলি চালানোর আগেই এই মাটির সন্তান ড. শামসুজ্জোহা বুলেটের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। আমাদের পূর্বপুরুষেরা ব্রিটিশদের বিতাড়িত করেছেন। আমারা লাল সবুজের পতাকা ছিনিয়ে এনেছি।’

সমাবেশে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আজ একটা সুন্দর পরিবেশ থাকার কথা ছিল। তার বদলে আমাদের আন্দোলনের বার্তা নিয়ে রাজশাহী আসতে হয়েছে। আমাদের আন্দোলন শুরু হয়েছে।’

সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘আজ জাতীয় ভোটার দিবস। অথচ মানুষ ভোটই দিতে পারেন না। আমরা এমন অবস্থা চাই না। সে কারণে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।’

বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হবে না উল্লেখ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন এমপি হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রার্থী কয়েক হাজার ভোট পান, আর বিএনপির প্রার্থী পান মাত্র ৯৮ ভোট। এটি কি আদৌ সম্ভব? মানুষ বোঝে। কাজেই এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন নয়।’

নগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সারোয়ার, রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত।

নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলনের পরিচালনায় সমাবেশে বিভাগের ৮ জেলার সভাপতি ও সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী অংশ নেন।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএসআর