ভবনে রডের বদলে বাঁশ: অভিযোগ গঠনে ৫ বছর
চুয়াডাঙ্গার দর্শনার উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের ভবন নির্মাণে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে
দুদকের করা আলোচিত সেই ‘রডের বদলে বাঁশের কাবারি’ শিরোনামের মামলায় চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর এই অভিযোগ গঠন করা হলো। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী আল মুজাহিদ মিঠু।
মঙ্গলবার (২ মার্চ) বিকেলে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতের বিচারক আশরাফুল ইসলাম উভয় পক্ষের আইনজীবীর যুক্তিতর্কের পর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এ সময় চার আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী আল মুজাহিদ মিঠু জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জয় ইন্টা. লি. এর মালিক মনির হোসাইন, প্রকল্প উপকরণ ক্রয় কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত আয়ুব হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের পরিকল্পনা, প্রকল্প বাস্তবায়ন ও আইসিটি উইংয়ের ভৌত অবকাঠামো ব্যবস্থাপনা শাখার উপসহকারী প্রকৌশলী কামাল হোসেন এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার্স কনসোর্টিয়াম লি. এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১০ জুন চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌর এলাকার কলেজপাড়ায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা প্রাক্কলন ব্যয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘ফাইটোসেনেটারি ক্যাপাসিটি শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের’ অবকাঠামো নির্মাণকালে নির্ধারিত ডিজাইন লঙ্ঘন, ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহার করে ছাদ ঢালাই করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
বিজ্ঞাপন
মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, সংশ্লিষ্টদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন না করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিলে দুর্নীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে নিজে আর্থিক সুবিধা নিয়ে সরকারের দুই কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ২২৭ টাকার আর্থিক ক্ষতি সাধনসহ সরকারের উন্নয়ন ভাবমূর্তি বিনষ্ট করেছেন, যার সত্যতা প্রাথমিক তদন্তে মিলেছে। বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশের পর দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সিনিয়র মনিটর ও ইভ্যালুয়েশন প্রকল্পের পরিচালক মেরিনা জেবুন্নাহার বাদী হয়ে নির্মাণাধীন ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ২০১৬ সালের ১১ এপ্রিল দামুড়হুদা মডেল থানায় দ.বি. ৪০৬/ ৪১৮/ ৪২৭ ধারায় মামলা করেন। পরে মামলাটি দুদক আইনে রূপান্তর করে দুদকের কুষ্টিয়া সমন্বিত কার্যালয়কে তদন্তভার দেওয়া হয়। তদন্ত শেষ করে ২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দেয় দুদক।
দুককের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আল মুজাহিদ বলেন, মামলাটি তদন্ত শেষ করে প্রায় আড়াই বছর আগে অভিযোগপত্র জমা দিলেও দোষীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনে সৃষ্টি হয় নানা জটিলতা। একদিকে ছিল না নির্ধারিত আদালত, অন্যদিকে গেল বছর পুরোটাই করোনা সংকটে আটকে ছিল বিচারিক এ প্রক্রিয়াটি। এখন খুব দ্রুতই মামলাটির বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হবে।
চার্জ শুনানিতে বিবাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে অ্যাডভোকেট হাসানুল আসকারী হাসু, আসাদুজ্জামান খান ও আবু জাফর অংশ নেন।
রাজু আহমেদ/এসপি