নিহত রফিকুলের বাবা হাবিব বেপারী

মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের শ্রীনদী গ্রামের চা বিক্রেতা হাবিব বেপারীর একমাত্র ছেলে রফিকুল বেপারী (২২)। আট মাস আগে সুদে ঋণ নিয়ে ও বসতবাড়ি বন্ধক রেখে ছেলেকে দালালের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে ইতালি পাঠান হাবিব বেপারী। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টায় ইতালি থেকে মুঠোফোনে খবর আসে রফিকুল বেপারী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। 

রফিকুলের মৃত্যুর সংবাদে পরিবারে শোকের মাতম চলছে। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বাবা-মা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। বোনেরা আহাজারি করছেন। 

নিহত রফিকুলের বাবা হাবিব বেপারী বলেন, আমার ছেলে রফিকুলকে গত ফেব্রুয়ারিতে ইতালির উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে নিয়ে যান পার্শ্ববর্তী ধুরাইল ইউনিয়নের হোসেনেরহাট এলাকার দালাল আলমগীর খা। এ সময় দালাল আলমগীরকে আমি নগদ সাড়ে ৯ লাখ টাকা দেই। পরে মাফিয়ারা নির্যাতন করে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করে আমার কাছ থেকে আরও ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। তারপরও আমার ছেলেকে লিবিয়া থেকে ইতালিতে নেয় নাই। পরে আমি অন্য দালাল কুদ্দুছের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা দিয়ে ইতালি পাঠাই। আলমগীর দালালের লোকেরা আমার ছেলেকে লিবিয়ায় শারীরিক নির্যাতন করে। অসুস্থ অবস্থায় ইতালি নেওয়ার পর সেখানকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আমি আলমগীর দালালদের ফাঁসি চাই। 

রফিকুলের মা রোকেয়া বেগম বলেন, আমার কলিজারে (ছেলে) যেভাবে অত্যাচার করেছে, সেই অত্যাচারের কারণে আমার কলিজার মৃত্যু হয়েছে। আমার ছেলের মতো যেন অন্য কোনো মায়ের বুক খালি না হয়- এজন্য আমি সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাই। দালালদের কঠিন শাস্তি চাই। 

নিহত রফিকুলের ছোট বোন রাশিদা বলেন, আমরা তিন বোন, এক ভাই। দালাল আলমগীর আমার ভাইকে অনেক কষ্ট দিয়েছে। তার জন্য আমার ভাই মরেছে। আমি তার ফাঁসি চাই। 

মাদারীপুর সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনোয়ার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কাছে ভুক্তভোগী পরিবার কোনো অভিযোগ করেনি।  অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

রাকিব হাসান/আরএআর