দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে চাকরিপ্রার্থীরা এসেছিলেন নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে। কিন্তু এসে দেখেন নোটিশ ঝুলছে- ‘নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত।’ নোয়াখালীর আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে চার পদের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের এমন নোটিশ দেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন চাকরিপ্রার্থীরা।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে তারা নোয়াখালী-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে। এরপর প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, নোয়াখালীর আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজে পূর্ব ঘোষণা না দিয়ে তৃতীয় শ্রেণির জনবল নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পরীক্ষার্থীরা কলেজের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কলেজের নিরাপত্তা প্রহরীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে

তবে পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, নিরাপত্তা প্রহরীরা তাদের ওপর লাঠিচার্জ করেন। এ সময় বিক্ষুদ্ধ পরীক্ষার্থীরা নোয়াখালী-ঢাকা সড়কে বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে অবরোধ করেন। পরে পুলিশ সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করে। পরীক্ষার্থীরা কলেজের প্রধান ফটকে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে তারা প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন। 

পরীক্ষার্থীরা বলেন, কলেজের তৃতীয় শ্রেণির চারটি পদ মেডিকেলে টেকনোলজিস্ট (ল্যাব), মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ফার্মেসি), ডেটা এন্ট্রি অপারেটর ও ড্রাইভার পদে ৮৫০ জন পরীক্ষর্থী অংশ নিতে আসেন। এসে দেখেন বিভাগীয় নিয়োগ কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরীক্ষা স্থগিতের নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

রংপুর থেকে আসা তাহমিনা আক্তার নামের এক পরীক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি সাড়ে ১৪ ঘণ্টা বাসে চড়ে এখানে এসেছি। প্রধান ফটকে সিট প্ল্যান লাগানো ছিল, তাও তারা পরীক্ষা  স্থগিতের নোটিশ দিয়েছে। 

ফাহিম হোসেন নামে আরেক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, গোপনে নিয়োগ নেবে তাই তারা আমাদের পরীক্ষা নিতে দেয়নি। বেকার হওয়ায় আমাদের নিয়ে তামাশা করেছে কর্তৃপক্ষ। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ কামনা করছি। 

লাঠিচার্জের অভিযোগ অস্বীকার করে আনসার সদস্য মো. নাহিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, তারা গেটে ভাঙচুর চালানোর জন্য অবস্থান করেন। এছাড়াও প্রধান ফটক ভাঙার চেষ্টা করেন। লাঠিচার্জ নয় তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।

নিয়োগ পরীক্ষা কমিটির সদস্য স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের প্রশাসন-৩ এর সিনিয়র সহকারী সচিব রাহেলা রহমত উল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে আমি ধারণা করেছি। আমি বলছি প্রশ্ন পরিবর্তনের জন্য। কেউ রাজি হননি। তাই আমি পরীক্ষার পক্ষে একমত ছিলাম না।

এ বিষয়ে নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মো. আব্দুছ ছালামের কক্ষে তাকে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও তার মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

হাসিব আল আমিন/আরএআর