সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছোনগাছা ইউনিয়নের পাঁচঠাকুরী এলাকার শাহজাহান মোড়ে হঠাৎ যমুনা নদীর প্রবল স্রোত ও ঘূর্ণাবর্তের কারণে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। রোববার (৩০ অক্টোবর) ভোর থেকে এ ভাঙন শুরু হয়। ইতোমধ্যে প্রায় ৩০০ মিটার এলাকা ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন আতঙ্কে নদী পাড়ের লোকজন ঘরবাড়ি ভেঙে সরিয়ে নিচ্ছে। 

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, ভাঙনরোধে দ্রুত জিওব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী রনজিত কর্মকার জানান, গত বছর ভাঙনকবলিত একই স্থানে অস্থায়ীভাবে মেরামত কাজ করা হয়েছিল। স্থায়ী মেরামতের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলেও কাজ শুরু হয়নি। হঠাৎ রোববার ভোরে যমুনা নদীর ঘূর্ণাবর্তের কারণে পাড়ে আঘাত হানায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে ভাঙন আতঙ্কে স্থানীয় লোকজন তাদের বাড়িঘর ও দোকানপাট অন্য জায়গায় সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে আশপাশের অর্ধশত বসতবাড়ি ও দোকানপাট সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পাশে নদী তীর রক্ষা বাঁধের ওপরে নির্মিত রানীগ্রাম-রতনকান্দি আঞ্চলিক সড়কটিও ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।

পাঁচঠাকুরী এলাকার আব্দুর রাজ্জাক জানান, ভাঙন শুরু হলে জিনিসপত্র সরানোর সময় থাকে না। এর আগে ভাঙনে দোকান ও মালামালসহ সব বিলীন হয়ে গেছে। তাই আতঙ্কে এবার দ্রুত দোকান সরিয়ে নিচ্ছি।

স্থানীয় আব্দুস সাত্তার ভুইয়া ও নজরুল ইসলাম জানান, যেভাবে নদী ভাঙছে, তাতে কখন বসতভিটাসহ সব বিলীন হয়ে যাবে বলা যাচ্ছে না। তাই দ্রুত ঘরবাড়ি ভেঙে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কোথায় যাব তা বলতে পারছি না। আপাতত সব কিছু অন্য জায়গায় স্তূপ করে রাখছি।

পাঁচঠাকুরী এলাকার মুদি দোকানি আব্দুল বাছেদ জানান, ড্রেজার মেশিন দিয়ে আশপাশের এলাকা থেকে অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলনের কারণে নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ এগুলো দেখেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে না।

সিরাজগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, আকস্মিক ভাঙনে নদীপাড়ের অনেকাংশ বিলীন হয়ে গেছে। জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করা হয়েছে। আশা করছি দু-একদিনের মধ্যে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

শুভ কুমার ঘোষ/আরএআর