ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড় পলাশবাড়ী ইউনিয়নের উজিরমুনি গ্রামে নিজের বাড়ির গেটে স্ত্রীকে নিয়ে দুদিন ধরে অবস্থান করছেন রায়হান আলী (৩৮) নামের এক যুবক। শুক্রবার (১১ নভেম্বর) সকাল থেকে খড়কুটো বিছিয়ে গেটের পাশে বসে আছেন তারা।

অন্যদিকে গেট তালাবন্ধ করে পরিবারের সদস্যরা বাড়িতেই রয়েছেন। তারা পেছনের দিকে থাকা একটি ছোট দরজা দিয়ে বাড়ি থেকে বের হলেও সেটিতে তালাবন্ধ করে রাখছেন। প্রবাসফেরত রায়হান আলী ওই গ্রামের আইজুল ইসলাম নামে এক কাঠমিস্ত্রির ছেলে।

শনিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রায়হান তার স্ত্রীকে নিয়ে নিজের বাড়ির গেটের পাশে খড়কুটো বিছিয়ে বসে আছেন। তাদের দেখতে এলাকার লোকজন ভিড় জমাচ্ছেন।

রায়হান অভিযোগ করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, মালয়েশিয়ায় ৫ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করেছি। মালয়েশিয়া থাকাকালীন সময়ে প্রতি মাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা বাড়িতে পাঠিয়েছি। সেই টাকা দিয়ে পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরেছে, বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। বাবা ও ৩ ভাই বাড়ির পাশে একটি করাতকল দিয়েছেন। আমি বাড়িতে ফেরার পর আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দিয়েছেন। শ্বশুরবাড়ি থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকা নিয়ে সেটাও বাবাকে দিয়েছি। এখন প্রায় ৩ মাস হলো তুচ্ছ ঘটনায় বাবা আমাকে স্ত্রীসহ বের করে দিয়েছেন। বাড়িতে আর উঠতে দিচ্ছেন না। স্ত্রীকে নিয়ে কোথায় যাব, কি করব! তাই বাড়ির গেটের সামনে অবস্থান নিয়েছি।

রায়হান আরও বলেন, প্রবাস থেকে যখন টাকা দিয়েছিলাম তখন আমি ভালো ছিলাম। এখন বাড়িতে ফেরার পর সবার কাছে আমি খারাপ হয়ে গেছি। গতকাল থেকে বাড়ির লোকজন মারধর করে এখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমরা যাইনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রায়হানের বাবা আইজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছেলে ও বউমাকে বাড়িতে রাখবো না। তারা আমার পরিবারের সম্মান রাখেনি। তাদের না রাখার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ৪ শতক জমি ও ১ লাখ টাকা দিয়েছি অন্য স্থানে বাড়ি করার জন্য। ওই ছেলেকে আমি ঘরে তুলব না।

এ বিষয়ে বড় পলাশবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন মিঞা ঢাকা পোস্টকে বলেন, এর আগে বাবা-ছেলের ঝামেলা মেটানো হয়েছে। এখন আবার নতুন করে শুরু হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য তাদেরকে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকা হয়েছে।

এম এ সামাদ/এমজেইউ