৩ বছর বয়সী আহসাফ আব্দুল্লাহ ওয়াহিদ জানে না বাবা-মায়ের মধ্যে কী নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। আইন আদালতের মাধ্যমে উভয়েই পৃথক হতে চেয়েছেন। ফুটফুটে আহসাফ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে বাবার দিকে, আবার কতক্ষণ তাকিয়ে থাকে মায়ের দিকে। সবকিছু শুনে শিশু আহসাফের দিকে তাকিয়ে সম্পর্ক অটুট রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন তারা।

রোববার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাদেকুর রহমানের হস্তক্ষেপে এবং মধ্যস্থতায় বিষয়টির পারিবারিক সমাধান হয়।

জানা যায়, ২০১৭ সালে ৬ লাখ টাকা দেনমোহরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরহাজারী ইউনিয়নের আলমগীর হোসেনের (৩২) এর সঙ্গে বসুরহাট পৌরসভার বাসিন্দা ফারজানা আক্তার ফাহিমার (২৬) বিয়ে হয়। বিয়ের ৩ বছর পর তাদের কোলজুড়ে ছেলে সন্তান আহসাফের জন্ম হয়। নানা কারণে আলমগীর হোসেনের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক দিন দিন অবনতি হতে থাকে ফাহিমার। 

গত ৭ নভেম্বর ফাহিমা স্বামী আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের অভিযোগে কোম্পানীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। গত ১১ নভেম্বর থেকে টানা ৩ দিন ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করেন কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাদেকুর রহমান। রোববার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে বিচ্ছেদে না গিয়ে তারা সংসার জীবনে ফিরে যাওয়ার অভিমত প্রকাশ করেন। 

স্ত্রী ফারজানা আক্তার ফাহিমা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি সংসার করবো না শতভাগ নিশ্চিত হয়েই থানায় অভিযোগটি দায়ের করেছি। কিন্তু ওসি স্যার আমাদের অনেক বুঝিয়েছেন। দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হওয়ায় এবং সম্মানজনকভাবে সংসার ফিরে পাওয়ায় বাংলাদেশ পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি।

স্বামী আলমগীর হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভুল আমারও ছিল। ওসি স্যার আমাকেও অনেকবার বুঝিয়েছেন। আমার বাচ্চার কথা বার বার মনে করিয়ে দিয়েছেন। সবশেষে আমরা উনার আন্তরিকতায় সকল অতীত ভুলে গেছি। আমাদের জন্য দোয়া করবেন। 

কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাদেকুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

তিনি বলেন, পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আমাদের সবার পরিবার আছে। সামান্য ভুল থেকে অনেক বিপদ হতে পারে। ফুটফুটে বাচ্চা দেখে আমার মায়া লেগেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে চেয়েছি সম্পর্ক অটুট থাকুক। বাচ্চাটা যেন বাবা-মাকে কাছে পায়। মধ্যস্থতায় তারা আগের মতো স্বামী-স্ত্রী মিলে বাচ্চাটার দিকে খেয়াল রাখবে তাই আমার কাছে ভালো লাগছে।

হাসিব আল আমিন/এমএএস