স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান স্যামসন এইচ চৌধুরীর সহধর্মিণী অনিতা চৌধুরী মারা গেছেন। রোববার (১৩ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। বার্ধক্যজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুকালে তিনি ৩ ছেলে ও ১ মেয়েসহ নাতি নাতনি ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি 'স্কয়ারের মাতা' নামে পরিচিত ছিলেন।

স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মা বার্ধক্যজনিত জটিলতার কারণে মারা গেছেন। স্কয়ার গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান স্যামুয়েল এস চৌধুরী, স্কয়ার ফার্মার ভাইস চেয়ারম্যান রত্না পাত্র, স্কয়ার ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী এবং স্কয়ার টয়লেট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর মা তিনি।

এদিকে তার মৃত্যুতে জন্মভিটা পাবনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। জেলার সকল ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ও সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক শোক বাণী দেওয়া হয়েছে।
  
পাবনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলী মর্তুজা বিশ্বাস সনি বলেন, দেশ বরেণ্য শিল্পপতি প্রয়াত স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা স্যামসন এইচ চৌধুরীর স্ত্রী অনিতা চৌধুরীর মৃত্যুতে জেলার ব্যবসায়ী মহলসহ সর্বস্তরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আমরা ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে শোক বার্তা জানিয়েছি।

তিনি বলেন, অনিতা চৌধুরী ছিলেন একজন মানবহিতৈষী। তিনি সবসময় মানুষের কর্মসংস্থান তৈরির মাধ্যমে মানবসম্পদ গড়ার বিষয়ে ভাবতেন। তিনি ছিলেন স্কয়ার গ্রুপের মাতা। ব্যবহারে অত্যন্ত নম্র-ভদ্র ও বিনয়ী ছিলেন। সবার সঙ্গেই তিনি মিশুক ছিলেন। সর্বদা হাসিমুখে কথা বলতেন।

পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু বলেন, অনিতা চৌধুরী পাবনার মাটি মানুষকে নিয়ে সব সময় ভাবতেন। জেলার উন্নয়নের তার ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। স্যামসন এইচ চৌধুরীর পাশে থেকে সব সময় কাজ করতেন। এছাড়া গরিব ও দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সহযোগিতা করতেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

এছাড়াও পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স, পাবনা চেম্বাব অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সভাপতি সাইফুল ইসলাম স্বপন চৌধুরী, পাবনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমানসহ জেলার বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতি, ব্যবসায়ীক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শোক প্রকাশ করেছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল সোমবার (১৪ নভেম্বর) ঢাকায় শেষ শ্রদ্ধা শেষে দুপুরের দিকে মরদেহ পাবনায় নিয়ে আসা হবে। কাশিপুরস্থ খামারবাড়ী এস্ট্রাসে স্যামসন এইচ চৌধুরীর পাশেই তাকে সমাহিত করা হবে। এর আগে জন্মভিটা আতাইকুলাতে নিয়ে যাওয়া হতে পারে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। সেখানে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন সর্বস্তরের ব্যক্তিবর্গ।

২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা স্যামসন এইচ চৌধুরী ৮৬ বছর বয়সে সিঙ্গাপুরের র‍্যাফেলস হাসপাতালে মারা যান। চার বন্ধুর হাত ধরে ১৯৫৮ সালে যাত্রা শুরু করে স্কয়ার গ্রুপ। ওষুধের ব্যবসা দিয়ে শুরু করলেও পরে তা স্বাস্থ্যসেবা, ভোগ্যপণ্য, বস্ত্র, মিডিয়া, টিভি ও তথ্যপ্রযুক্তি, নিরাপত্তা সেবা, ব্যাংক ও ইনস্যুরেন্স, হেলিকপ্টার ও কৃষিপণ্যে বিস্তার করে। তাদের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মোট ২০টি।

রাকিব হাসনাত/এমএএস