গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বাংলাদেশের অবস্থা কেমন সংবাদমাধ্যমে সেই খবর আসে। আমাদের নারীরা ওএমএসের লাইনে দাঁড়িয়ে ও রাস্তা থেকে চাল কুড়িয়ে সংগ্রহ করছেন। এই হলো আমাদের অবস্থা। গ্রামের অবস্থা আরও ভয়াবহ। প্রধানমন্ত্রী, আপনার উন্নয়ন আজকে দুর্ভিক্ষের আওয়াজে পরিণত হয়েছে।

শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সরকার ও শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনে ঐক্যবদ্ধের আহ্বান জানিয়ে ‘রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে বাধা, হামলা-মামলা, দমন-পীড়ন ও গুলি-হত্যা বন্ধ কর’ এই দাবিতে সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, আপনার উন্নয়ন ১৪ বছরে এসে দুর্ভিক্ষে রূপ নিয়েছে। আপনিই বলেছেন, আমরা বলিনি। প্রতিদিন রিজার্ভ কমছে। কেন কমছে? এর কারণ আপনার উন্নয়নের নামে বছরে কোটি কোটি টাকা পাচার হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আট হাজার লেনদেন পেয়েছে, যেগুলোকে তারা অস্বাভাবিক বলছে। এসবের সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ রয়েছে। ডলারের কোষাগার ফাঁকা। এমন লুটপাট আগে বাংলাদেশে কখনো ঘটেনি। এ সরকারের আমলে দশ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এই টাকা কার? আপনাদের উন্নয়নে আমাদের আজ এ অবস্থা। তাই আমাদের প্রথম কাজ এ সরকারকে পদত্যাগ করানো। একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। সুষ্ঠু নির্দলীয় সরকার কাঠামো গঠন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে তারা কাউকে দাঁড়াতে দেয়নি। ২০১৮ সালে সুষ্ঠু ভোট দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিল। আমরা ভোটে দাঁড়িয়েছিলাম। দেখলাম এই সরকার কীভাবে মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেছে। জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, পুলিশ রাতে ভোট দিয়েছে, এমন কথা কোথাও শুনিনি। আমরা সরকারকে বলতে চাই, জাপানের রাষ্ট্রদূতের কথা কি আমরা অস্বীকার করতে পারি? দেশের মান-সম্মান নিয়ে আমরা চিন্তিত, আপনারা নন। আপনারা র‌্যাবের মতো প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিকভাবে হেয় করেছেন।

সরকারের উদ্দেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, তাদের মুক্তিযুদ্ধের অধিকার হলো- তারা ক্ষমতায় থাকবে, কিন্তু মানুষ ভোট দিতে পারবে না। প্রতিপক্ষকে হাত-পা বেঁধে নিজেরা অস্ত্র নিয়ে, পুলিশ নিয়ে বলে খেলা হবে। নির্বাচনে আসুন, আমরা আপনাদের হাত-পা বাঁধব না। আওয়ামী লীগ দেশকে ধর্মের নামে, মুক্তিযুদ্ধের নামে বিভাজিত করতে চায়। আমরা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছি। আওয়ামী লীগ শুধু বিরোধী দলের নয়, নিজ দল ও সমর্থকদের ভোটাধিকারও কেড়ে নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার কাছে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব নিরাপদ নয়। তাই আমরা তার পদত্যাগ চাই। তারা ক্ষমতা ছাড়বে না। তারা বলে বিরোধী দল বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছে। আমরা বলি এতোদিন বিদেশিদের কাছে ধরনা দিয়ে স্টিম রোলার চালিয়ে আপনারা ক্ষমতায় টিকেছিলেন। আজ ক্ষমতা হারানোর ভয়ে ভীত হয়ে আছেন।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ।

আবির শিকদার/এমজেইউ