কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে লক্ষ্মীপুরসহ সারাদেশে উৎসব বিরাজ করছে। কেউ বিশাল আকারের পতাকা বানিয়ে প্রিয় দলের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন। আবার কেউ পুরো বাড়িটিই পতাকার রংয়ে সাজিয়ে তুলছেন। তেমনি একজন লক্ষ্মীপুরের সংবাদকর্মী নুর মোহাম্মদ। তার প্রিয় দল সৌদি আরব। এতে নিজের বসতঘরটি সৌদি পতাকার রংয়ে রাঙিয়ে তুলেছেন তিনি। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ভিড়ে গ্রামের একমাত্র সৌদি ভক্তের এমন কাণ্ডে অবাক অনেকেই। 

সরেজমিনে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের বাঙ্গাখাঁ গ্রামে গেলে, পুকুরপাড় ঘেঁষে বাড়িতে প্রবেশ করতেই উঠানের পূর্ব পাশে সবুজ আর সাদা রংয়ে রাঙানো ঘরটি বেশ নজর কাড়ে। বাড়িটিতে অনেকগুলো পাকা ও আধাপাকা ঘর রয়েছে। এর মধ্যেই সৌদি ভক্ত নুর মোহাম্মদের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ বাড়িটিকে আলোকিত করে তুলেছেন। 

দূর থেকে প্রথমেই নজর কাড়ে টিনের চালের সামনে ও দক্ষিণ পাশের অংশে স্থান পাওয়া সৌদি আরবের পতাকা। ঘরের সামনে আলাদা বাঁশে টাঙানো দুটি পতাকা বাতাসে উড়ছিল। ঘরের প্রবেশ পথেই আরও একটি পতাকা ঝুলতে দেখা যায়। এর এক পাশে নিজ ছবিসহ প্রিয় ফুটবল টিমের খেলায়াড়দের ছবি সংবলিত ব্যানার ঝুলানো হয়েছে। এক কথায় ঘরের টিনগুলোকে সবুজ আর কাঠগুলো সাদা রংয়ে রাঙিয়ে তিনি সৌদি আরবের প্রতি ভালোবাসা ফুটিয়ে তুলেছেন। 

নুর মোহাম্মদ ওই এলাকার গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে। তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত লাখো কণ্ঠ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন।

নুর মোহাম্মদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মুসলমানদের জন্য সৌদি আরব পবিত্র ভূমি। মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সাঃ) জন্মস্থান হওয়ায় সৌদি আরবের প্রতি মুসলমানদের অকৃত্রিম ভালোবাসা রয়েছে। সেখান থেকেই সৌদি আরব ফুটবল দলকে ভালোবাসেন তিনি। তার গ্রামে তিনি একাই সৌদি ভক্ত। পাশে আর কাউকে পাচ্ছিলেন না তিনি। অনেক কষ্টে কয়েকজনকে রাজি করালেও তাদের আবেগটা কাজ করছে না দলটির প্রতি। তবে তিনি নতুন ভক্তদের বুঝিয়ে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করার চিন্তা করছেন বলে জানিয়েছেন। 

নুর মোহাম্মদ বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আমাদের আইডল। তার জন্মভূমিকে আমি ভালোবাসি। এছাড়া দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অধিকাংশ হচ্ছেন সৌদি প্রবাসী। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে আমাদের দেশকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে সৌদি আরব। এজন্যই আমি সৌদি আরবের ফুটবল দলের ভক্ত। 

তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রথমে তিনি বাংলাদেশকেই ভালোবাসেন। একদিন এ দেশও বিশ্বকাপ খেলবেন বলে তিনি আশাবাদী। তবে বর্তমানে তিনি একমাত্র সৌদি আরবকেই সমর্থন করছেন। আগামীতে তার এলাকায় সৌদি আরবের ভক্ত বাড়বে বলেও আশাবাদী তিনি।

হাসান মাহমুদ শাকিল/কেএ