লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতিকে আওয়ামী লীগের সভাপতি ঘোষণা করায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন আওয়ামী লীগের এক অংশের নেতা-কর্মীরা।

শনিবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে লালমনিরহাট-বুড়িমারী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা।

এর আগে দুপুরে নীলফামারীর তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া অবসর রেস্ট হাউসে জেলা আওয়ামী লীগের সভায় এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

বিক্ষোভকারী নেতাকর্মীরা জানান, দীর্ঘ ১২ বছর পর গত ৮ অক্টোবর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী শাহাজান খান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। প্রথমার্ধের আলোচনা সভা শেষে আগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়।  

দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতি-সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় সমঝোতা করতে ব্যর্থ হন কেন্দ্রীয় নেতারা। মূলত সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি ও ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সিরাজুল হকের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। পরে দুই গ্রুপকে একত্রিত করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী গ্রুপের সাবেক বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আলীকে সভাপতি এবং সিরাজুল হকের গ্রুপের ছাত্রনেতা কমলাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ ওমর চিশতিকে সম্পাদক করার প্রস্তাব কমিটি ঘোষণা না করেই সম্মেলন স্থগিত করেন।

এদিকে সদ্য ঘোষিত কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে শনিবার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে লালমনিরহাট-বুড়িমারী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে তৃণমূল আওয়ামী লীগ। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।

এদিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, বর্তমান আওয়ামী লীগের উপজেলা সভাপতি মোহাম্মদ আলী ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা একজন কর্মী। এছাড়া তিনি ছাত্রলীগ ও যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান হিসেবেও একাধিকবার নির্বাচিত হয়েছিলেন। মাঝে একটু ভুল বুঝে তিনি বিএনপিতে যোগদান করেন। তবে সেটিও বেশি দিনের ছিল না। এছাড়া গত নির্বাচনেও তিনি নৌকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। আগামী নির্বাচনে নৌকা যেন হেরে যায় সেই কৌশল করতেই তারা মাঠে নেমেছে। এটি কখনোই হতে দেওয়া যাবে না। 

আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীকে সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক রফিকুল আলমকে সম্পাদক করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর সহকারী ব্যক্তিগত সচিব মিজানুর রহমান মিজানকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে।

বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- রাবি ছাত্রলীগ নেতা কমলাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ ওমর চিশতি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রশিদ, উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নবি হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম, কমলাবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্পাদক অমূল্য রায়, ভাদাই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্পাদক ইকবাল হোসেন প্রমুখ।

নিয়াজ আহমেদ সিপন/এসপি