মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় মাহাফুজুর রহমান নামে এক ওষুধ ব্যবসায়ীকে ফাঁসানোর ঘটনায় পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশের এসআই নয়ন সাহার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে পিবিআই।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে তিন সাক্ষীসহ অভিযোগকারীর কাছে পিবিআই গাইবান্ধা কার্যালয় হতে (পিবিআই/গাইবান্ধা/৩০৭১) স্মারক মূলে চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে আগামী বুধবার ৩০ নভেম্বর সাক্ষী ও অভিযোগকারীকে স্বশরীরে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

গাইবান্ধা শহরের মাস্টারপাড়া এলাকার ওই ওষুধ ব্যবসায়ী আইজিপির কাছে অভিযোগ করলে গাইবান্ধা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার এশার নামাজ আদায় করে প্রতিদিনের ন্যায় দোকানে কোরআন তেলাওয়াত করছিলেন মাহফুজ। এমন সময় হঠাৎ সিভিল ড্রেসে ৬/৭ জন পুলিশ কর্মকর্তা এসে পবিত্র কোরআন সরিয়ে দেয়। এ সময় তাদের সালাম দিতেই সালামের প্রতি উত্তরে খারাপ মন্তব্য করে একজন বলেন আমাদের কাছে খবর আছে তোর দোকানে ইয়াবা আছে। এই বলে মাহফুজের দোকান সবাই মিলে তছনছ করে। পরে দোকানে কিছু না পেয়ে তারা ৩টি খালি ফেনসিডিলের বোতল, ছোট ছোট ৩ পুরিয়া গাঁজা কোথায় থেকে বের করে মাহাফুজকে প্রথমে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। 

সেখানে তাকে কোনো ধরনের পরীক্ষা না করে ডাক্তারকে বলেন তিনি গাঁজা খেয়েছেন। এরপর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক সরকারি টিকিটে কিছু লিখে দেওয়ার পর মাহাফুজকে সদর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ সদস্যরা। থানার হাজতখানায় গভীর রাতে এসআই নয়ন সাহা মাহাফুজকে রাগান্বিত ভাষায় বলেন- ‘তুই মদ খেয়েছিস এটা আদালতে স্বীকার করবি তাহলে তোকে ২৫০ টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দিবে। আর এসব বিষয় নিয়ে কোন ধরনের বাড়াবাড়ি করবি না।’

ঘটনার পরদিন শনিবার একটি নন এফেয়ার (গাঁজা সেবনের মামলা) দিয়ে আদালতে প্রেরণ করলে আদালতে বিচারকের কাছে গাঁজা খাওয়ার বিষয়টি মাহাফুজ অস্বীকার করলে বিচারক তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। মাহাফুজ টানা ১০ দিন কারাভোগ করে জামিনে মুক্তি লাভ করে।

পরে চলতি বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর মাহাফুজ ডাকযোগে পুলিশের মহাপরিদর্শক আইজিপি বরাবর ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তসহ এসআই নয়ন সাহার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানান।

রিপন আকন্দ/এমএএস