সড়কে অগ্নিসংযোগ

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়ায় ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী ফুটবল খেলার মাঠ রক্ষার দাবিতে ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন সড়ক অবরোধ ও অগ্নিসংযোগ করেছেন স্থানীয়রা। সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে গড়েয়ার সর্বস্থরের সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজন মাঠ প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করেন।  পরে মানববন্ধন শেষে সড়কে আগুন জ্বালিয়ে ও গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করেন তারা। 

কলেজছাত্র গৌতম কুমার বলেন, এ মাঠে আমাদের বাপ-দাদারা খেলেছেন। আমরাও এ মাঠে খেলে আসছি৷ এখন এটি দখল করার পায়তারা চলছে। যদি খেলার মাঠ না থাকে তাহলে আমরা কী করব। আমাদের মানসিক বিকাশের জন্য এ মাঠটি দরকার। আমরা কোনোভাবেই এ মাঠটি দখল করতে দেব না। 

বিলাসী রাণী বলেন, আমাদের ছোট বাচ্চারা স্কুল শেষে এই মাঠে খেলাধুলা করে। আমার জন্মের আগে থেকেই দেখছি এটা খেলার ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের হরিভাষরসহ বিভিন্ন ছোট-বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান এই মাঠে আয়োজন করা হয়। এখন শুনছি যে মাঠ বিক্রি করা হয়েছে। আমাদের দাবি আমাদের এই মাঠ আমাদের পরের প্রজন্মের জন্য রক্ষা করা হোক।

স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক অতুল চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের বাপ-দাদার আমল থেকে গড়েয়ার এই ঐহিত্যবাহী ফুটবল মাঠ আমরা দেখে আসছি। এখানে বিভিন্ন ধরনের খেলার আয়োজন করা হয়। হঠাৎ করে কয়েকজন এসে মাঠ দখল নিতে চায়। তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের গ্রামবাসীকে হয়রানি করতেছে। আমরা এটার সঠিক বিচার চাই। আমরা আমাদের মাঠের ঐতিহ্য বজায় রাখতে চাই।

গড়েয়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি লাবলু বলেন, মাঠ দখল করাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন পর পর মারামারি হয়। আর যারা মাঠ দখল করতে আসছে তারাই আবার মামলা দিচ্ছে। মাঠের দাবি করছেন যিনি তিনি ব্যবসায়ীদের নামে মামলা দিয়েছে। গতকাল আমাদের দুজন ব্যবসায়ীকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। আমরা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এবং আমাদের ব্যবসায়ী বন্ধুদের দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার জন্য আজ এই বিক্ষোভ করেছি। আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে পরে আমরা সকল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেব।

এ ঘটনায় ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আসামি ধরার পর এলাকাবাসী রাস্তা অবরোধ করেছিল। সেখানে গিয়ে পুলিশ বোঝানোর পরে এলাকাবাসী ভুল বুঝতে পারে এবং অবরোধ তুলে নেয়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে ও সড়কে গাড়ি চলছে। 

এম এ সামাদ/আরকে