জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয় সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে তোপের মুখে সাংবাদিকরা
সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ অফিসের ডাকবাংলোয় কর্মচারী সুরজিৎ কুমার মুজুদারের (৪২) মৃত্যুর সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে প্রধান নির্বাহীর তোপের মুখে পড়েন সাংবাদিকরা।
তথ্য সংগ্রহে গেলে প্রধান নির্বাহী কামরুন নাহার ডাকবাংলোর প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়ে বাধা সৃষ্টি করেন। এ সময় সাংবাদিকরা ফুটেজ বাণিজ্য করেন উল্লেখ করে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (৩০ নভেম্বর) সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের ডাকবাংলোয় এসব ঘটনা ঘটে। পরে প্রধান নির্বাহীর অসৌজন্যমূলক আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা।
ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক দিলীপ গৌর, আমাদের নতুন সময়ের সোহাগ হাসান জয়সহ কর্তব্যরত বেশ কয়েকজন সাংবাদিক বলেন, সংবাদ সংগ্রহে ডাকবাংলোয় গেলে প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেন প্রধান নির্বাহী কামরুন নাহার।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, আপনারা পরে আসেন। পুলিশের অনুমতি নিয়ে আসেন। আপনারা আলামত নষ্ট করার জন্য এখানে আসছেন। ফুটেজ প্রয়োজন হলে পুলিশের কাছ থেকে নেন। ঘরের ভেতরে ঢুকতে পারবেন না।
এ সময় সাংবাদিকরা কি করতে পারবে এমন চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দেন তিনি। পরবর্তীতে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এলে তার হস্তক্ষেপে সাংবাদিকরা ছবি, ফুটেজ ও সংবাদ সংগ্রহ করেন।
এরপর এ ঘটনায় সাক্ষাৎকার নিতে গেলে প্রধান নির্বাহী সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা ফুটেজ বাণিজ্য করেন। আপনারা ভুল তথ্য দিয়ে সারাদেশের মানুষদের বিভ্রান্ত করেন।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন সিরাজগঞ্জের কর্মরত সাংবাদিকরা।
একইসঙ্গে সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি হেলাল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক জাকিরুল ইসলামের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসকের কাছে মৌখিক অভিযোগ করে কামরুন নাহারের অপসারণ দাবি করেন।
সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাকিরুল ইসলাম সান্টু বলেন, একজন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন ব্যবহার কল্পনাও করা যায় না। সাংবাদিকেরা সংবাদের স্বার্থে ছবি, ফুটেজ ও তথ্য সংগ্রহ করবে এটা তাদের পেশাগত দায়িত্ব। তিনি কোনোভাবেই সেই দায়িত্বে বাধা দিতে পারেন না ও তাদের সঙ্গে এমন আচরণ করতে পারেন না।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ আব্দুল লতিফ বিশ্বাস বলেন, আমার সামনেই তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলছেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন ব্যবহার কেন করলেন সেটা তিনিই বলতে পারবেন।
জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ সাংবাদিকদের বলেন, এর আগেও তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ পেয়েছিলাম। আজ সাংবাদিকদের অভিযোগ শুনলাম। তার এমন আচরণ সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত, এর দায় প্রতিষ্ঠানের ওপর বর্তাবে না। বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে কথা বলবো। এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা একটি সুপারিশ মন্ত্রণালয় ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবো।
শুভ কুমার ঘোষ/এমএএস