আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তারেক রহমান মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়ে গেছে। তার লোকেরা আমাদের ভয় দেখায় বীরের মতো তারেক রহমান আসছে। যে কাপুরুষের মতো পালিয়ে গেছে সে বীরের মতো আসবে কী করে। এটা আমাদের বিশ্বাস হয় না। তারেক জিয়া রাজনীতি না করার শর্তে মুচলেকা দিয়ে বিদেশে গেছে। দেশে আসলে তারেককে জেলে যেতে হবে। কারণ সে দণ্ডিত আসামি। 

শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে নোয়াখালীর বসুরহাট এএইচসি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, সাম্প্রদায়িকতার বিশ্বস্ত ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাছিনার কাঁচপুরে ঢাকা-সিলেট সড়কের ভিত্তিপ্রস্তর ফলক পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। গত পরশু রাতে বিআরটিসির দ্বিতল বাস মতিঝিলে ভয়াবহভাবে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। বিএনপি জানান দিচ্ছে আন্দোলনে সহিংসতার প্রথা তারা যুক্ত করবে।

তিনি বলেন, একটা ভিডিও ক্লিপ পেয়েছি। সেই ভিডিওতে তারেক রহমান বলে হাসিনা পালাবে, মন্ত্রীরা পালাবে। সে যে পালিয়ে আছে তা কেন বলে না। ২০০৮ থেকে সে পলাতক। সে শেখ হাসিনাও বলে না, কত বড় বেয়াদবি। আমরা বেগম খালেদা জিয়া বলি। সম্মানের সাথে নেত্রীর নামটাও উচ্চারণ করে না।

সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ পরিবর্তন করেছি। ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। সেখানে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছি। আসলে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিশ্বাস করে না। পল্টনে কয়টা লোক ধরবে? অঘটনের ভয়ে বিএনপি ৩৫০০ স্কয়ারফিট জায়গায় সমাবেশ চাচ্ছে।

কোম্পানীগঞ্জের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংকট সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোম্পানীগঞ্জে যা ঘটেছে তা আর মনে করতে চাই না। ব্যবসায়ীরা বার বার আতঙ্কিত হয়ে আমাকে ফোন করেছে। আমি তাদের কাছে ক্ষমা চাই। কোম্পানীগঞ্জের জনগণের কাছে ক্ষমা চাই। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বলবো জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে।

তিনি বলেন, আমি একরামকে (সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী) ক্ষমা করে দিয়েছি। আমার ভাইকেও (বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা)  ক্ষমা করেছি। ক্ষমা করা মহৎ গুণ। গাছ যত বড় হয় তার ওপর আঘাত তত বেশি আসে। 

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুন্নবী চৌধুরীর সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম। 

সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক বেগম ফরিদুন্নাহার লাইলী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রাত নন্দী, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিহাব উদ্দিন শাহীন, সহিদ উল্যাহ খান সোহেল, বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা প্রমুখ বক্তব্য দেন। 

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১২ বছর পর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সম্মেলনকে ঘিরে স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

হাসিব আল আমিন/আরএআর