শীত উপেক্ষা করে সমাবেশ স্থলে বিএনপি নেতাকর্মীরা
রাজশাহীতে কনকনে শীত উপেক্ষা করে সমাবেশ স্থলে জড়ো হতে শুরু করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। রাতে উত্তরাঞ্চলের জেঁকে বসা শীতের মধ্যেই সমাবেশ স্থলের পাশের একটি ঈদগাহ মাঠে তাঁবু টানিয়ে আড্ডা-গল্পে মশগুল হয়েছেন তারা। সর্বশেষ গত দুই দিনের মধ্যে শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সবচেয়ে বেশি নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে হাজির হয়েছেন।
অস্থায়ী তাঁবুগুলোতে নেতাকর্মীদের একসঙ্গে থাকার সুবাদে মাঝেমধ্যে হচ্ছে ‘মিনি সমাবেশ’। সমাবেশে বিভিন্ন এলাকার সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দিচ্ছেন। বক্তব্যে রাজনীতি জীবনে নিজেদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো তুলে ধরছেন তারা। একই সঙ্গে দলকে সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের উৎসাহমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া সমাবেশ স্থলের আশপাশের সড়কে একের পর এক খণ্ড খণ্ড মিছিল লক্ষ্য করা গেছে। মিছিলগুলোতে কোনো ধরনের ব্যানার দেখা যায়নি। তবে ২০ থেকে ২৫ জন মিলে আলাদাভাবে মিছিল করছেন। কোনো কোনো মিছিলে তার বেশিও নেতাকর্মীরা থাকছেন।
তাদের মধ্য একজন বিএনপি নেতা শরিফ উদ্দিন। তিনি রাজশাহীর গোদাগাড়ী থেকে এসেছেন। তার সঙ্গে বেশ কিছু কর্মীরাও রয়েছেন। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিভিন্ন দিকনিদের্শনামূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। এছাড়া বিগত দিনের রাজনীতি কেমন ছিল, সেসব নিয়েও তারা কথা বলছেন। তার কথা শেষ হলে অন্যজন আবার কথা শুরু করছেন। এইভাবে ঈদগা মাঠে থাকা তাঁবুগুলোতে চলছে ছোট ছোট সমাবেশ।
বিজ্ঞাপন
তাদের মধ্যে অন্য একজন রাতুল। তিনি বিভিন্ন সময় মিছিলের সামনে থেকে স্লোগান দিচ্ছেন। নেতাকর্মীদের স্লোগানে স্লোগানে উজ্জীবিত করছেন। অনেকেই আবার সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করছেন।
মাঠের একপাশে বিএনপি ও জিয়া পরিবারকে নিয়ে ‘প্রতিযোগিতা কর্নার’ করা হয়েছে। প্রতিযোগিতা কর্নারটি রাজশাহী জেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম তৈরি করেছেন। সেখানে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বেশি কিছু ছবি সাঁটানো রয়েছে। সেখানে এসে কেউ কেউ বক্তব্য দিচ্ছেন। এসব নিয়ে জনসমাবেশের আগেই মিনি সমাবেশে পরিণত হয়েছে ঈদগাহ মাঠ।
নওগাঁর জেলা বিএনপির তাঁবুতে শুকুর আলী নামের এক ব্যক্তিকে ‘ভুভুজেলা’ বাঁশি বাজাতে দেখা গেছে। তার চারপাশে নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিচ্ছেন। আর তিনি বাঁশি দিয়ে সঙ্গে তাল মেলাচ্ছেন। তিনি থামার পরে সেখানে কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। বক্তব্যে নেতারা বলেন, এখানে এসেছি, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ডাকে। সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে। আমাদের দাবি, দেশমাতা ও আপসহীন নেত্রীর মুক্তি।
প্রসঙ্গত, সারাদেশে এখন পর্যন্ত আটটি জনসভা করেছে বিএনপি। রাজশাহীতে শনিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। সমাবেশের জন্য রাজশাহী মহানগর শাখা নগরীর মাদরাসা মাঠে মঞ্চ তৈরি করেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। সমাবেশে যোগ দিতে, নাটোর, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, জয়পুরহাট ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সহ বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আসছেন রাজশাহী মহানগরে।
এদিকে বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিতে ইতোমধ্যে রাজশাহীতে পৌঁছেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে বিমানযোগে তিনি হজরত শাহ মখদুম বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখানে স্থানীয় নেতারা তাকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি রাজশাহীর কাজিহাটা এলাকার একটি হোটেলে রাত্রিযাপন করবেন।
শাহিনুল আশিক/কেএ