রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে অংশ নেওয়া মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এ সময় সিইসি বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের পাশাপাশি মেয়র প্রর্থীদের কাছ থেকে তাদের অভিযোগ শোনেন।

সোমবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির অডিটরিয়ামে মতবিনিময় সভা শুরু হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা মতবিনিময় সভায় প্রার্থীদের আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে নির্বাচনকালীন করণীয় বিধিনিষেধ প্রসঙ্গে আলোচনা করেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, কমিশনের সচিব জাহাঙ্গীর আলম, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম, আরপিএমপি কমিশনার নুরেআলম মিনা, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব আবদুল বাতেন, জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জি এম সাহতাব উদ্দিন প্রমুখ।

মতবিনিময় সভায় উন্মুক্ত আলোচনায় মেয়র-কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্য থেকে কয়েকজন আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ধরে জানান, বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিধি লঙ্ঘন করে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা, একাধিক ক্যাম্প স্থাপন, মিছিলসহ ভোটারদের বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করা হচ্ছে। এ সময় প্রার্থীরা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট প্রদান সম্পর্কে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্টদের আরও বেশি কার্যক্রম চালানোর জন্য সিইসির প্রতি আহ্বান জানান।

পরে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রার্থীদের আচরণবিধি, গণসংযোগসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে ধরে বক্তৃতা করেন। এ সময় তিনি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্তদের করণীয় নিয়ে কথা বলেন।
 
মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) শফিয়ার রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল, খেলাফত মজলিশের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল রাজু, জাকের পার্টির খোরশেদ আলম খোকন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু রায়হান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেদী হাসান বনি এবং লতিফুর রহমান মিলন ছাড়াও ৩৩টি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন।

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই সিটিতে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে দুই লাখ ১২ হাজার ৩০২ জন পুরুষ এবং দুই লাখ ১৪ হাজার ১৬৭ জন নারী ভোটার ২২৯টি কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এবার মেয়র পদে নয়জনসহ মোট ২৫৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সিটির ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে একজন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর এ সিটিতে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল। ওই নির্বাচনে একটি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হলেও এবার পুরো সিটির ২২৯টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর