আমার মেয়ে ও নাতিকে ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে
আমার মেয়ে হালিমা বেগম ও নাতি সাদমান আত্মহত্যা করেনি। ছোট শিশু কীভাবে আত্মহত্যা করবে? তাদের ৫তলা থেকে ফেলে হত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দুই জনের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমি আমার মেয়ে ও নাতি হত্যার বিচার চাই। আমি গরিব মানুষ দেখে কি বিচার পাবো না? এভাবেই অভিযুক্ত জামাই শাহিনুর রহমানের ফাঁসি দাবি করে মানবন্ধনে বিচার চাইলেন দিনমজুর বাবা আব্দুল ওয়াব।
বুধবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার দলগ্রাম ইউনিয়নের পাটোয়াটারি বাজারে প্রায় ৫ শতাধিক নারী ও পুরুষসহ এলাকাবাসী এ মানববন্ধনে অংশ গ্রহণ করে। এ সময় তারা মানবন্ধন শেষে বিচার দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গত সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৬টার দিকে ডেমরার ডগাইর পূর্ব পাড়ার (সাবেক সানারপাড়) এলাকায় ৫তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শিশুসহ এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
নিহত হালিমা বেগম (২৫) এবং তার দেড় বছরের সন্তান সাদমানকে নিয়ে স্বামীর সঙ্গে ভবনটির ৫ তলায় ভাড়া থাকতেন। তার গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার দলগ্রাম ইউনিয়নের পাটোয়াটারি গ্রামে।
বিজ্ঞাপন
মানববন্ধনে তারা জানান, প্রায় সাড়ে ৪ বছর আগে উপজেলার দলগ্রাম ইউনিয়নের শ্রীখাতা এলাকার আব্দুল ওহাব আলীর মেয়ে হালিমা বেগমের সঙ্গে একই উপজেলার নাককাটির ডাংগা এলাকার জেহেদ্দি ইসলামের ছেলে শাহিনুর রহমানের বিয়ে হয়। বিয়ের পর হালিমা বেগমের বাড়ি থেকে প্রায় ৩ লাখ টাকা নিয়ে আসতে বলতেন। কিন্তু দিনমজুর বাবা এতো টাকা কোথায় পাবেন এমন প্রশ্ন করলেই তাকে প্রায় সময় মারধর করতেন। একপর্যায়ে রাগারাগি করে হালিমা বেগম বাড়িতেও চলে আসেন। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে মীমাংসা করে আবারও শাহিনুরের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
কিন্তু গত ১৩ ডিসেম্বর দুপুরে আবারও ওই টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে সীমা বেগম মারধরের শিকার হন। পরে তার বোন রাহেনা বেগমকে বিষয়টি অবগত করেন। ওই দিন রায়না বেগম একাধিকবার তার ভগ্নিপতি শাহিনুর ইসলামকে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেনি। প্রায় পাঁচ দিন পর শাহিনুর রহমান রোববার (১৮ ডিসেম্বর) স্ত্রী হালিমা বেগম ও তার দেড় বছরের শিশু সন্তান সাদমানকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে তাদের পাঁচ তলা থেকে ফেলে দেয়। পরে ভোর ৬টার দিকে তার পরিবারকে হালিমা বেগমের স্বামী শাহিনুর ইসলাম জানায় তার মেয়ে ৫তলা থেকে পড়ে আত্মহত্যা করেছে।
মানববন্ধনে নিহতের বাবা আব্দুল ওহাব আলী বলেন, আমার মেয়ের সাড়ে ৩ বছর হলো বিয়ে হয় শাহিনুর রহমানের সঙ্গে। ওই সময় দুই লাখ টাকার মধ্যে এক লাখ টাকা দেনমোহর হিসেবে দেই। বাকি এক লাখ টাকা দিতে না পারায় আমার মেয়ে ও দেড় বছরের নাতিকে রড দিয়ে গত রোববার পিটিয়ে হত্যা করে লাশ ৫তলার নিচে ফেলে রাখে। আমি আমার মেয়ে ও নাতি হত্যার বিচার চাই।
নিয়াজ আহমেদ সিপন/এমএএস