রিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে স্ত্রীসহ কনস্টেবল আটক
রংপুরে রিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ
রংপুরে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে নাজমুল ইসলাম নামে শারীরিক প্রতিবন্ধী এক রিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় কনস্টেবল হাসান আলী ও তার স্ত্রী সাথী বেগমকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর আশরতপুর কোর্টপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত নাজমুল ইসলাম লালমনিরহাটের মোস্তফি এলাকার বাসিন্দা। কনস্টেবল হাসান আলীর কিনে দেয়া রিকশা চালাতেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যের শাস্তির দাবিতে সন্ধ্যায় সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। তারা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবস্থান নিলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, লালমনিরহাটের মোস্তফি এলাকার শারীরিক প্রতিবন্ধী হাসান আলী (৩০) রংপুর নগরীর আশরতপুর ঈদগাহ্পাড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন। তার পায়ে সমস্যা থাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা ভাড়া নিয়ে চালাতেন।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত কনস্টেবল হাসান আলীর বাড়ি গাইবান্ধায়। তিনি রংপুরে আশরতপুর কোর্টপাড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে পরিবারসহ বসবাস করে আসছেন।
মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে রিকশা নিয়ে হাসান আলীর সঙ্গে নাজমুলের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে রিকশাচালককে বেধড়ক মারধর করেন হাসান। একপর্যায়ে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে কোর্টপাড়ার বাড়িতে নিয়ে যান পুলিশ সদস্য।
বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ওই বাড়িতে নাজমুলের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে ওই বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। খবর পেয়ে তাজহাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাদেরও অবরুদ্ধ করেন বিক্ষুব্ধরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রিকশাচালক নাজমুলকে পিটিয়ে হত্যার পর তার মরদেহ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার প্রচারণা চালিয়েছেন পুলিশ সদস্য হাসান। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী রংপুর-কুড়িগ্রাম সড়কের পার্কের মোড়ে অবস্থান নিয়ে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষুব্ধ জনতাকে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতয়ালি জোন) আলতাব হোসেন বলেন, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ হাসান আলী ও তার স্ত্রী সাথী বেগমকে আটক করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এএম