গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। রোববার (১৫ জানুয়ারি) সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, টঙ্গীর কামারপাড়াসহ আশেপাশের এলাকায় মুসল্লিদের ঢল নামে। ৯টা ৫৫ মিনিটে আখেরি মোনাজাত শুরু হয়ে ১০টা ২০ মিনিট পর্যন্ত তা স্থায়ী ছিল। এই আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইল মারকাজের তাবলিগ জামায়াতের সুরা সদস্য ও শীর্ষস্থানীয় নেতা মাওলানা ক্কারী মো. জোবায়ের হাসান।

মোনাজাতের পরপরই আখেরি মোনাজাতের উদ্দেশ্যে আসা মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দান ছাড়তে শুরু করেছেন। আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত মুসল্লিরাও ইজতেমা এলাকা ছাড়ছেন। তবে খিত্তায় অবস্থান নেওয়া মুসল্লিরা পর্যায়ক্রমে ময়দান ছাড়বেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আগামীকাল পর্যন্ত ময়দানে অবস্থান করবেন।

৪৮নং খিত্তায় অবস্থান নেওয়া মুসল্লি মাওলানা নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা একটি বাস রিজার্ভ করে এসেছি। আমাদের নামিয়ে দিয়ে বাস চলে গেছে। আজ ভিড় থাকায় আমরা চালককে বাস নিয়ে আসতে নিষেধ করেছি। ইনশাআল্লাহ আগামীকাল আমাদের বাস আসলে আমরা কুড়িগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেব।

আখেরি মোনাজাতে দেশের কল্যাণ, মুসলিম উম্মার সুদৃঢ় ঐক্য, আখেরাত ও দুনিয়ার শান্তি কামনা করা হয়। এ সময় দুহাত তুলে মহান আল্লাহ’র দরবারে ফরিয়াদ জানায় লাখ লাখ মুসল্লি। এর আগে হেদায়তী বয়ান করা হয়। ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমানের হেদায়তী বয়ানের পর পরই শুরু করা হয় আখেরি মোনাজাত।

বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মো. মাহফুজ জানান, আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে শনিবার রাত থেকেই ইজতেমাস্থল টঙ্গীর তুরাগের তীর অভিমুখে মানুষের ঢল নামে। রোববার সকাল ৯টার দিকে ইজতেমা ময়দানের আশপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। শীত ধুলাবালি উপেক্ষা করে কয়েক কিলোমিটার দূরে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, কার, ট্যাক্সি ও অন্যান্য যানবাহন রেখে হেঁটেই মুসল্লিরা ছুটে যান ময়দানের দিকে।

মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিমান বন্দর থেকে বোর্ডবাজার-গাজীপুরা-টঙ্গী-আশুলিয়াসহ বিভিন্ন সড়ক মুসল্লিতে একাকার হয়ে যায়। যে দিকেই চোখ যায় শুধু পাঞ্জাবী-টুপি পড়া মানুষ আর মানুষ। ইজতেমা মাঠ বিস্তৃত হয়ে পড়ে গোটা মহাসড়ক, অলিগলি থেকে শুরু করে বাড়িঘরের ছাদ সর্বত্র ছিল মুসল্লিতে পরিপূর্ণ।

মোনাজাতে অংশ নিতে অনেকে ইজতেমার মূল ময়দানে ঢুকতে না পেরে পত্রিকা, পাটি, চট, জায়নামাজ, পলিথিন বিছিয়ে রাস্তায় বসে পড়েন মুসুল্লিরা। অনেকেই আবার মোবাইল ফোনে দূর-দূরান্ত থেকে মোনাজাতে শরিক হন।

শিহাব খান/আরকে