১০১ একরজুড়ে হাসছে সূর্যমুখী
সূর্যমুখী বাগান দেখতে এসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রগতি বৈদ্য
সৌন্দর্যের দিক দিয়ে ফুলের মধ্যে সূর্যমুখী অন্যতম। ভোর হলেই চোখ মেলে হাসে। নীল আকাশের সঙ্গে হলুদ ফুলগুলোর মায়াবী রূপ যে কারও মনে দোলা দেয়। দেখলে মনে হয় অপরূপ সৌন্দর্যে সেজেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের পূর্ব পাশে ও পার্ক ক্যাফেটেরিয়ার সামনে ১০১ একরজুড়ে ফুটেছে অসংখ্য সূর্যমুখী। বছরের মার্চ-এপ্রিলের সময়টাতে এই দৃশ্য দেখা যায়।
বিজ্ঞাপন
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নির্দেশনায় এবং কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রতি বছর সূর্যমুখী চাষ হয়। প্রকৃতির শোভাবর্ধনকারী এই সূর্যমুখী একটি উৎকৃষ্ট একবর্ষজীবী তেলজাতীয় ফসল।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তেলবীজ হিসেবে সূর্যমুখীর ব্যাপক চাষ করা হয়। হেলিয়ানথাস বৈজ্ঞানিক নামের এই ফুলটি ১৯৭৫ সাল থেকে তেলজাতীয় ফসল হিসেবে বাংলাদেশে চাষ হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রধানত কিরণী (ডিএস-১), বারি সুর্যমুখী-২, হাইসান-৩৩ ইত্যাদি জাতের সূর্যমুখী চাষ হয়। সূর্যমুখী একদিকে যেমন মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে অপরদিকে জ্বালানির চাহিদা পূরণ করে।
বিজ্ঞাপন
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ বলেন, করোনায় শিক্ষার্থীদের কোলাহল না থাকলেও ক্যাম্পাস নিষ্প্রাণ নয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মেতেছে। নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছে সূর্যমুখী ফুল। হাজারো সূর্যমুখীতে সুশোভিত হলুদ আঙিনায় মুগ্ধতার হাতছানি। সৌন্দর্যের এই সূর্যমুখী দেখে মন ভরে যায় প্রকৃতিপ্রেমীদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাহানা রহমান বলেন, হলুদ আর সবুজের সমারোহ সূর্যমুখীর মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে দর্শনার্থীরা ব্যস্ত। প্রকৃতির এই সৌন্দর্যের মুগ্ধতায় সবার মন ছুঁয়ে যায়। এই সৌন্দর্য মন ভালো করে দেয় সাহিত্যিক ও প্রকৃতিপ্রেমীদের। যে ফুলের অপরূপ শোভা অন্তরাত্মায় জাগায় নতুন স্পন্দন। তাইতো কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেছেন, ‘রাত্রি শেষে কখন আবার, তোমার বাগানজুড়ে ফোটে সূর্যমুখী।’ করোনার এই আঁধার কেটে যাক, ক্যাম্পাসের সূর্যমুখীর মতোই ফুটে উঠুক আমাদের শিক্ষার্থীরা।
ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী অন্তু পাল বলেন, আমাদের ১০১ একরের ক্যাম্পাস সৌন্দর্যে ভরপুর। প্রতি বছর মার্চ মাসে এই সৌন্দর্য নতুন রূপে ফিরে আসে সূর্যমুখী ফুলের আগমনে। সারি সারি ফুলের সমারোহ দেখলে মনে হয়; সূর্যের সব সৌন্দর্য মাটিতে নেমেছে। সূর্যমুখী বাগানের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয় সবাই। এত এত সূর্যমুখী ফুল দেখলে অবাক হই মাঝে মাঝে। সবার আকর্ষণের কেন্দ্র এই সূর্যমুখী বাগান।
বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহমিদা কনা বলেন, ছোটবেলা থেকে ফুল আমার বেশ পছন্দ। ফুল দেখলে মুহূর্তের মধ্যে মনটা আনন্দে ভরে যায়। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় আমরা কয়েকজন বান্ধবী সূর্যমুখী দেখতে এসেছি। নিজ ক্যাম্পাসের সূর্যমুখীর সঙ্গে ছবি তুলব।
নোয়াখালী শহরের বাসিন্দা শাকিল আহমেদ পরিবার নিয়ে সূর্যমুখী বাগানে এসেছেন। তিনি বলেন, সূর্যমুখী ফুলের কথা শুনে পরিবার নিয়ে এসেছি। মাঠভরা সূর্যমুখী ফুল দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। একসঙ্গে এত সূর্যমুখী ফুল আগে দেখা হয়নি। সূর্যমুখীর বাগান আগে কখনো দেখিনি, তাই এখানে ছুটে আসা। আমি বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে এসেছি। একসঙ্গে এত ফুল দেখে আমি অবাক।
এএম