গ্রেফতার আতঙ্কে থমথমে বসুরহাট
সংঘর্ষ এড়াতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় বসুরহাট পৌর এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গ্রেফতার আতঙ্কে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সকাল থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শনিবার (১৩ মার্চ) দুপুর ১২টায় সরেজমিনে দেখা যায়, বসুরহাট পৌর ভবনের চারদিক ঘিরে রেখেছেন পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা। সাদা পোশাকের গোয়েন্দা সদস্যরাও রেখেছেন কড়া নজরদারি। এছাড়া জিরো পয়েন্টে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু চত্বর, রুপালি চত্বর, উপজেলা হাসপাতাল গেট, কলেজ গেট ও উত্তর বাজার এলাকায় পুলিশ ও র্যাব সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
এদিকে একাধিক মামলায় গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছেন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। কিছুটা প্রাণ ফিরেছে ব্যবসা-বাণিজ্যে। খোলা রয়েছে পৌরসভার অধিকাংশ দোকানপাট।
বসুরহাট ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন নিজাম জানান, বাজারের অবস্থা আগের থেকে স্বাভাবিক। অধিকাংশ দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে। কিন্তু বসুরহাট বাজারের নিরীহ ব্যবসায়ীদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে গ্রেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
বিজ্ঞাপন
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক দুইজন পুলিশ সদস্য যুক্ত করেছে ঊর্ধ্বতন প্রশাসন। এছাড়া পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো হয়েছে অতিরিক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা।
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিভিন্ন মামলায় আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। নতুন করে যেন আর কোনো সহিংসতার ঘটনা না ঘটে, সেজন্য মোতায়েন করা হয়েছে তিন শতাধিক পুলিশ, ১৬ র্যাব সদস্য এবং ঊর্ধ্বতন ১০ কর্মকর্তা।
নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন জানান, কোম্পানীগঞ্জে আর কোনোভাবে বিশৃঙ্খলা হতে দেব না। সে লক্ষ্যে আমাদের অতিরিক্ত পুলিশ-র্যাব কাজ করছে।
এদিকে শুক্রবার (১২ মার্চ) বিকেল থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত বসুরহাট পৌর এলাকা থেকে মেয়র আবদুল কাদের মির্জার আট সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন- ইকবাল চৌধুরী (৪৭), মহিউদ্দিন (৪০), আবুল খায়ের বিপুল (৩০), জাকের হোসেন সাহাবউদ্দিন (৩৬), ইউসুফ নবী (৪২) এবং আবদুল মালেক (৪৪)।
কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক সাংবাদিকসহ দুইজন মারা গেছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতটি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এতে সহস্রাধিক লোককে আাসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে কাদের মির্জার প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলও রয়েছেন।
হাসিব আল আমিন/এসপি/এমএমজে