হঠাৎ হাজির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব!

মহাসড়কের পাশে মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারীর সন্তান প্রসবের সময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জাকিয়া পারভীন। রোববার (২২ জানুয়ারি) দুপুর ১টায় হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর মুক্তিযুদ্ধ চত্বর এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে নাম-পরিচয়হীন ওই নারী একটি ফুটফুটে ছেলে শিশুর জন্ম দেন। 

অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণ থেকে শুরু করে প্রসববেদনা পর্যন্ত চরম অবহেলায় সবকিছু হলেও সন্তান প্রসবের সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন, দুইজন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সহকারী পরিচালকের মতো বড় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

তারপর রাস্তার পাশেই চাদর দিয়ে ঢেকে রেখে স্বাভাবিক প্রসব করানো হয়। এরপর মা ও সন্তানের ঠিকানা হয় মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. নুরুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অফিসিয়াল কাজে ঢাকা থেকে হবিগঞ্জ আসার পথে ঘটনা শোনামাত্র জগদীশপুর মুক্তিযুদ্ধ চত্বরে আসেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জাকিয়া পারভীন, সহকারী পরিচালক ডা. রওশন জাহান ও আখতার জাহান। তাদের উপস্থিতিতে বেলা ১টার দিকে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী স্বাভাবিক সন্তান প্রসব করেন।

মাধবপুর উপজেলা প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে জগদীশপুর মুক্তিযুদ্ধ এলাকায় ওই মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছিল। রোববার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে জগদীশপুর মুক্তিযুদ্ধ চত্বর এলাকায় এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারী প্রসব বেদনায় ছটফট করতে থাকেন। কয়েকজন বিষয়টি মাধবপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মনজুর আহসানকে ফোনে জানান। খবর পেয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মনজুর আহ্সান মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে নার্স ও অ্যাম্বুলেন্সসহ এসে মা ও নবজাতককে উদ্ধার করে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। বর্তমানে মা ও শিশু দুজনেই সুস্থ আছেন।
 
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইশতিয়াক আল মামুন বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছি। তাৎক্ষণিকভাবে জগদীশপুর ইউনিয়নের স্বাস্থ্যকর্মীরা নবজাতক ও প্রসূতি সেবার ব্যবস্থা করেছে। এ ঘটনার খবর পেয়ে মাধবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. শাহজাহান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুর আহসান, মাধবপুর থানা পুলিশের ওসি আঃ রাজ্জাক, পুলিশ পরিদর্শক আতিকুল ইসলাম, শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান, সমাজসেবা কর্মকর্তা আশরাফ আলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে মা ও নবজাতককে দেখে গেছেন।
 
মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর আহসান বলেন, নবজাতকের মা যেহেতু মানসিক ভারসাম্যহীন এবং বাবার পরিচয় নেই, তাই শিশুটির লালন-পালন ও ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবে সমাজসেবা অধিদফতর।

আজহারুল মুরাদ/এমএএস