মিঠামইন থানার ডিউটি অফিসারের রুমে হাজির হলে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি সোলাইমানের হাতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়

বিষয়টি অবাক করার মতো হলেও সত্য। ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে হাতকড়া না পরিয়ে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন থানা পুলিশ।

শনিবার (১৩ মার্চ) বিকেলে হঠাৎ মিঠামইন থানার ডিউটি অফিসারের রুমে হাজির হলে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি সোলাইমানের হাতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

পুলিশ জানায়, মিঠামইনের শরীফপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মো. সোলাইমান একটি সিআর মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। গ্রেফতারের জন্য তাকে খুঁজছে পুলিশ। এরই মধ্যে কয়েকবার তাকে ধরতে বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।

শনিবার বিকেলে থানায় হাজির হন সোলাইমান। এ সময় ডিউটি অফিসার তাকে জিজ্ঞেস করেন কেন এসেছেন? সোলাইমান বলেন আমার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আছে। আমি ধরা দিতে এসেছি। আমাকে গ্রেফতার করেন। তার কথা শুনে ডিউটি অফিসার অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন।

ডিউটি অফিসার মো. মরিনুজ্জামান জানান, ওয়ারেন্টভুক্ত একজন আসামিকে ধরতে কত কষ্ট করতে হয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অভিযান চালাতে হয়। গ্রেফতার এড়াতে নানা কৌশল অবলম্বন করে আসামি। অথচ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে থানায় এসে ধরা দিলেন সোলাইমান। এটি অবাক করা ঘটনা।

এরপর সোলাইমানকে ওসির কক্ষে নিয়ে গেলেন ডিউটি অফিসার। ওসি বললেন এই সোলাইমান ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি সোলাইমান কিনা রেজিস্ট্রার খাতা দেখে নিশ্চিত হন। রেজিস্ট্রার খাতায় দেখা যায়, এই সেই সোলাইমান; যাকে খুঁজছে পুলিশ।

থানায় এসে ধরা দেওয়ায় তাকে সাধুবাদ জানান ওসি। আইনের প্রতি ​একজন অপরাধীর শ্রদ্ধা দেখে ওসি সিদ্ধান্ত নেন তাকে পুরস্কৃত করবেন। যেন তাকে দেখে পলাতক আসামিরা এভাবে থানায় এসে হাজির হন। তাই সোলাইমানকে হাতকড়া না পরিয়ে গোলাপ ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ওসি।

সোলাইমান বলেন, পলাতক জীবন খুবই কষ্টের। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম পুলিশের হাতে ধরা দেব। এজন্যই থানায় হাজির হলাম।

মিঠামইন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির রব্বানী বলেন, সোলাইমানের বিষয়টি অবাক করার মতো। ​যারা পলাতক আছেন; আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে থানায় অথবা আদালতে হাজির হন। আপনার বিরুদ্ধে যে মামলাই থাকুক, সহযোগিতা পাবেন। বিচারকাজে সহযোগিতা করলে হয়তো আপনি মুক্তিও পেতে পারেন।

এসকে রাসেল/এএ