১১১ দখলদারের কবজায় সিলেটের নদ-নদী
নদীর মাঝখানে বিশাল চর। দেখে মনে হবে খেলার মাঠ। অন্যদিকে তার এক পাশের তীর থেকে দেদার বালু তুলে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দূর থেকে কেউ বুঝতেই পারবে না যে এখানে নদী থেকে বালু তোলা হচ্ছে। আরেক স্থানে নদীর ঠিক মাঝখান পর্যন্ত ময়লার স্তূপ জমে আছে। দেখে মনে হবে এ যেন ময়লার ভাগাড়। একসময়ের নদীরানি সুরমার আজ হৃতযৌবন, খরস্রোতা সুরমা আজ মৃতপ্রায়।
সিলেটের কুশিঘাট, মাছিমপুর, কালিঘাট, তোপখানা, কাজিরবাজার, চাঁদনীঘাট ও কদমতলী এলাকায় ঘুরে সুরমা নদীর এমন চিত্র দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশের দীর্ঘতম কয়েকটি নদীর মধ্যে সিলেটের সুরমা। প্রায় ২৪৯ (১৫৫ মাইল) কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সুরমা নদীর ১১০ কিলোমিটারই পড়েছে সিলেটের ভেতরে। নদী ভরাট, দূষণ ও দখলের কারণে অস্তিত্ব-সংকটে পড়েছে এ নদীটি। একসময়ের খরস্রোতা সুরমার অনেক জায়গায় চর জেগেছে। এর অনেক স্থানে তীর থেকে বালু তোলা হচ্ছে। এসব কারণে সুরমা আজ মরতে বসেছে।
সুরমাতীরের বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানা গেছে, দখলের কৌশল হিসেবে প্রথমে বাজারের সব ময়লা-আবর্জনা ও কাঁচামালে উচ্ছিষ্ট নদীর পাড়ে স্তূপ করে রাখা হয়। পরে ওই জায়গাটুকু বাঁশ দিয়ে ঘেরাও করে মাটি, ইট-সুরকি দিয়ে স্থায়ীভাবে ভরাট করা হয়ে থাকে। একসময় এই অংশে গড়ে তোলা হয় দালানকোঠা। আবার নদীপাড়ের কলোনির পয়োনিষ্কাশনের বর্জ্য যাচ্ছে নদীতে। এতে দূষিত হচ্ছে পানি, বিষিয়ে উঠছে পরিবেশ। স্থানীয়দের অভিযোগ, নদী দখলের এমন প্রক্রিয়া চলছে দীর্ঘদিন ধরে।
বিজ্ঞাপন
নগরের বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে খ্যাত কালিঘাট অংশের অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ। জেলার সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার এই কালিঘাট। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নিত্যপণ্য এসে পৌঁছায় বাজারটিতে। এসব পণ্যের কয়েক টন বর্জ্য তৈরি হয় প্রতিদিন। সেগুলোও ফেলা হয় সুরমায়। কালিঘাটের উল্টো দিকে চাঁদনী ঘাট এলাকায় গড়ে উঠেছে সিলেটের গাড়িভাঙা শিল্প। এখানে প্রতিদিনই ভাঙা হয় পুরোনো গাড়ি। প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রি করার পর অপ্রয়োজনীয় লোহালক্কড় ফেলা হয় সুরমা নদীতে।
শুকনা মৌসুমে দুই পাড়ে বর্জ্যের স্তূপে এক কুৎসিত রূপ নেয় সুরমা নদী। আর শীত মৌসুমজুড়ে নদীর দুই পাড়ের কয়েকটি অংশে চর জেগে ওঠে। পরিবেশ অধিদফতর ও সিটি করপোরেশনের তদারকি না থাকায় সুরমার দুপাড়ের এই অপব্যবহার দিনদিন বাড়ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, সুরমা নদী হবিগঞ্জে গিয়ে কালনি নাম ধারণ করে। এই কালনি পুনরায় ভৈরবের কাছে গিয়ে মেঘনা নাম ধারণ করে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। একসময় বরাক হয়ে আসা পানির ৪০ শতাংশ সুরমা নদী দিয়ে প্রবাহিত হতো। কিন্তু উৎসস্থল জকিগঞ্জের অমলসিদ থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার পর্যন্ত সুরমা নদীর বিভিন্ন স্থানে চর জেগে ওঠায় এখন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে স্বাভাবিক প্রবাহ। ফলে ২০ শতাংশ পানি নিয়ে সুরমা এখন অনেকটাই মরা নদী।
সেভ দ্য এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হেরিটেজের প্রধান সমন্বয়ক আবদুল হাই আল হাদী ঢাকা পোস্টকে বলেন, নদীর অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে প্রশাসনের চরম উদাসীনতা রয়েছে। শুধু সিটি করপোরেশন এলাকা ছাড়া এর বাইরে কোনো অভিযান হয় না। তাতে বোঝা যাচ্ছে, নদীর প্রতি তাদের মায়া নেই।
সুরমা রিভার কিপার আবদুল করিম বলেন, সুরমা নদীতে পানির প্রবাহ কম থাকার কারণে প্রচুর চর জেগেছে। অপরিকল্পিতভাবে নদী খননের কারণেই এমন হচ্ছে। তা ছাড়া যে বালুমহাল থেকে বালু উত্তোলনের কথা, সেভাবে না তুলে সুবিধামতো স্থান থেকে বালু তোলা হচ্ছে। ফলে সুরমার বুকে বিশাল চর জাগায় মনে হয় খেলার মাঠ হয়ে আছে। এই সময়টায় সুরমা হেঁটে পার হওয়া সম্ভব হয়। সিলেট অতিক্রম করার পর সুরমার পানির সঙ্গে একের পর এক নদী এসে যুক্ত হয়। এতে তার পানির প্রবাহ বাড়ায় সুনামগঞ্জের দিকে সুরমা অনেক বড় হয়েছে।
দখলদারের কবজায় সিলেটের নদ-নদী
সিলেট সিটি করপোরেশনসহ আটটি উপজেলায় ১১১ জন দখলদারের কবজায় রয়েছে সিলেটের বেশির ভাগ নদ-নদী। পাকা, আধা পাকা ও টিনশেডের স্থাপনা তৈরি করে সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা-কুশিয়ারাসহ প্রায় আটটি নদীর ৩ হাজার ৬০০ মিটার জায়গা তাদের দখলে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের হিসাবমতে, সুরমা, কুশিয়ারা, গোয়াইন, মাকুন্দা, ধলাই, মরা ধলাই, তৈমুর নগর ও সূর্যখাল নদ-নদীর প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার তীর নদীখেকোদের দখলে। এসবের মধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশনে ৪৫০ মিটার, গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদ বাজারে ১০০, বালাগঞ্জ উপজেলার সদরে ২৫০ ও বালাগঞ্জে ১০, গোলাপগঞ্জ উপজেলার ৫ নম্বর বুধবারী বাজারে ৩০০, কানাইঘাট উপজেলার বাজারে ২৫০, গাছবাড়ি বাজারে ৩০০, বিশ্বনাথ উপজেলার সিঙ্গেরকোচ এলাকায় ৬০, লামাটুকের বাজারে ১০, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় বাজারে ৯০০ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ১ হাজার ৫০০ মিটার নদীতীর অবৈধ দখলে রয়েছে। এসব দখল করা স্থানে ছোট ছোট বস্তিও গড়ে তোলা হয়েছে। এদিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত তৈমুর নগর নদ একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়েছে। শুধু কাগজেই এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
দখল হওয়া এসব নদ-নদীর তীর উদ্ধারে প্রশাসনের তেমন কোনো তৎপরতা চোখে পড়ে না। গত দুই বছরে সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় সুরমা নদীর তীর দখল করা ২৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এর বাইরে দু-একটি জায়গায় উচ্ছেদ অভিযান চললেও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নদীখেকোদের উচ্ছেদে নিশ্চুপ প্রশাসন।
পরিবেশবাদীদের দাবি, নদী রক্ষায় সরকারের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। সিলেটে কতটি নদ-নদী রয়েছে, কতটি ভরাট হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়েছে, তারও কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। এমনকি জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন নদীর তীর দখলকারীদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে, সেটিও ত্রুটিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন তারা।
সেভ দ্য এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হেরিটেজের প্রধান সমন্বয়ক আবদুল হাই আল হাদী বলেন, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন নদী দখলদারদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে, তা সঠিক নয়। এর বাইরেও অনেক দখলদার রয়ে গেছে। প্রতিটি নদ-নদী পরিদর্শন করে এই তালিকা প্রকাশ করা দরকার। তারই আলোকে ঘন ঘন উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে নদীকে অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।
নদ-নদী দখলের মচ্ছব নিয়ে কথা হয় সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শহীদুজ্জামান সরকারের সঙ্গে। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, আমরা দেখেছি জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে দখল উচ্ছেদে সাড়া দিয়েছেন। সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, তখন সরকারের বিপক্ষে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দাঁড়াতে পারে না। অনেক দখলদার অনেকভাবে ওপর মহলে তদবির করেছে। কিন্তু যখন তারা বুঝতে পেরেছে এটা সরকারি সিদ্ধান্ত, তখন তারা নিজ উদ্যোগেই এসব স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছে। এমনকি আমরা যখন উচ্ছেদ অভিযানে যাই, তখন আমরা কোনো বাধার সম্মুখীন হইনি।
নদীর তীরবর্তী স্থানে কখনো বাজার বা স্থাপনা হতে পারবে না উল্লেখ করে শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, নদীর তীরে এমনভাবে কিছু ওয়াকওয়ে তৈরি করা উচিত, যাতে এসব স্থান কেউ দখল করতে না পারে। একেকটা উচ্ছেদ অভিযানের ব্যয়ও প্রচুর। কেউ যখন দখল করে কোনো স্থাপনা তৈরি করে, সেই স্থাপনা ভাঙতেও সরকারের প্রচুর টাকা খরচ হয়। পাউবোর আওতায় ২০১৯ সালের মার্চ মাসের পর সিলেটের সুরমা নদীর আর কোনো স্থানে ড্রেজিং করা হয়নি, যোগ করেন তিনি।
সিলেটের ৮ নদ-নদী দখলের চিত্র
সিলেটের আটটি নদ-নদীর প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার তীর অবৈধ দখলে রয়েছে। দুই বছর আগে এসব নদ-নদীর তীর উচ্ছেদে অভিযান থাকলেও বর্তমানে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। ফলে নদীগুলোর তীর দখল করে গড়ে উঠেছে দোকান, ফার্মেসি, বস্তি, খাবারের হোটেল, গুদামঘর, রাইস মিল, বাসা, কাঠের দোকান, পোলট্রি ফার্মসহ বেশ কিছু স্থাপনা।
সুরমা
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় সুরমা নদীর ৪৫০ মিটার জায়গা ২৩ জন দখলদারের কবলে। তারা নদীতীরবর্তী স্থানে ৭২টি স্থাপনা গড়ে তুলেছেন। অবশ্য ২০১৯ সালের নভেম্বরে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে সরেজমিনে দেখা গেছে, উচ্ছেদ হওয়া স্থান ফের দখলে নিয়ে নিচ্ছেন তারা। এ ছাড়া কানাইঘাট বাজারে সুরমা নদীর ২৫০ মিটার দখল করে রেখেছেন স্থানীয় ছয় দখলদার। সেখানে ২৩টি অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছেন তারা। অন্যদিকে কানাইঘাট উপজেলার গাছবাড়ি এলাকায় সুরমা নদীর ৩০০ মিটার দখলদারদের হাতে। একই উপজেলার গাছবাড়ি এলাকায় সুরমার ৩০০ মিটার দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন ২৫ জন নদীখেকো।
কুশিয়ারা
সিলেটের বালাগঞ্জে এ নদীটির ২৫০ জায়গা দখল করে অবৈধভাবে ২০টি স্থাপনা গড়ে তুলেছেন স্থানীয় ২০ জন নদীখেকো। এ ছাড়া এই উপজেলায় শাহজালাল ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি ও কুশিয়ারা পাওয়ার প্ল্যান্ট নদীটির ১০ মিটার জায়গায় তাদের স্থাপনা নির্মাণ করে দখলে রেখেছে। গোলাপগঞ্জ উপজেলার বুধবারবাজার এলাকায় কুশিয়ারা ৩০০ মিটার তীরে ২০টি স্থাপনা নির্মাণ করে দখলে রেখেছেন স্থানীয় চন্দরপুর এলাকার ১৭ জন দখলবাজ। ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারার ৯০০ মিটার তীরে ৩৫টি পাকা, আধা পাকা ও টিনশেডের ঘর নির্মাণ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
গোয়াইন
এ ছাড়া গোয়াইনঘাট উপজেলায় গোয়াইন নদের ১০০ মিটার দখল করে চারটি স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। এসব জায়গা দখল করে স্থাপনা গড়ে তুলেছে খোদ উপজেলা পরিষদ।
মাকুন্দা
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার সিঙ্গেরকাচ বাজারে মাকুন্দার ৬০ মিটার তীরে ১২টি স্থাপনা নির্মাণ করে দখলে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। লামাটুকেরবাজার এলাকায় নদীটির আরও ১০ মিটার জায়গায় অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে তিনটি স্থাপনা। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মোহাম্মদপুর বাজার অংশে মাকুন্দার ৪০ মিটার জায়গা দখল করে ৯টি স্থাপনা তৈরি করে ভোগ করে আসছেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা।
ধলাই
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার এই নদের ৪০০ মিটার জায়গায় রয়েছে পাকা, আধা পাকা ও টিনশেডের ৩৫টি স্থপনা। এই নদের দখলদারদের আজও চিহ্নত করতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড।
মরা ধলাই
পাথরের রাজ্যখ্যাত সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার এই মরা ধলাই নদের ৪০০ মিটার দখলে। সেখানে পাকা ঘর ও দোকানপাটসহ ৩৫টি স্থপনা নির্মাণ করে রেখেছেন স্থানীয় দখলদাররা। তাদেরও নাম চিহ্নিত করতে পারেনি পাউবো। তবে স্থানীয়দের তথ্যমতে, এ নদীটি প্রায় নিশ্চিহ্ন।
তৈমুর নগর
প্রায় ১৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই নদ দখল-ভরাটে একেবারে নিশ্চিহ্ন। পাউবোর তথ্যমতে, তৈমুর নদের ৪০ মিটার জায়গা দখল করে পাকা ঘর টিনশেডের দোকানসহ ১৯টি স্থপনা নির্মাণ করা হয়েছে। তবে স্থানীয়রা বলছেন, দখল, দূষণ ও ভরাটে এই নদের অস্তিত্বই নেই।
সূর্যখালী খাল
পাথরের রাজ্য কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সূর্যখালী খালও রয়েছে নদীখেকোদের দখলে। এই খালের ৩০০ মিটার জায়গা দখল করে ২৫টি স্থাপনা নির্মাণ করেছেন দখলদাররা। তবে পাউবো বলছে, এসব দখলদারের তথ্য খুঁজে পায়নি তারা।
এদিকে নদীখেকোদের দখলে থাকা স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদী রক্ষা করতে না পারায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা। তারা বলছেন, নদীর অভিভাবকদের চরম উদাসীনতার কারণে অবৈধ দখলদারদের দখলে নদীর তীর। নদীকে বাঁচাতে এসব দখলদারকে উচ্ছেদ করতেই হবে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্থানীয়ভাবে নদ-নদীর গুরুত্ব অপরিসীম। এই নদ-নদীগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। একপর্যায়ে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনও গঠন করা হয়েছে। নদ-নদীগুলো যাতে দখলমুক্ত থাকে, সেই ব্যাপারে এই কমিশন বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকে। নদী রক্ষায় সার্বিকভাবে আমরা সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখি। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। আমার অনুরোধ, স্থানীয়ভাবে জনগণও যাতে এই ব্যাপারে সচেতন থাকেন।
নদীতে চর পড়া একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, এমন মনে করে তিনি বলেন, তবে আমাদের দেখতে হবে এই চর পড়ার কারণে চলাচলে সমস্যা হচ্ছে কি না। সিলেটের প্রেক্ষাপটে নদ-নদীতে আট মাস পানি থাকে। এই আট মাস চলাচলে কোনো সমস্যা হয় না। বাকি চার মাস নদীর পানি শুকিয়ে যায়। তবু অবৈধ দখল যাতে না হয়, সে বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা আছে। পাশাপাশি উচ্চ আদালতের নির্দেশনা তো রয়েছেই। সব মিলিয়ে আমাদের উচ্ছেদ অভিযানও চলমান রয়েছে।
এনএ