এসআই তাজ

কক্সবাজার বিমানবন্দরে গত বছর ২৪ নভেম্বর ৫ লাখ টাকাসহ আটক হন কোর্ট পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রবিউল ইসলাম। এ টাকা পাচারের নেপথ্যে দায়িত্বরত এপিবিএনের উপ-পরিদর্শক (এসআই) তাজ রয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। নিয়মিত চাঁদা না দিলে যাত্রীদের নানাভাবে হয়রানির অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। 

পুলিশ ও বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ২৪ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকাগামী এক যাত্রীর ব্যাগে পাঁচ লাখ নগদ টাকা দেখে টাকার উৎস ও নথিপত্র চাইলে স্ক্যানার অপারেটরকে লাখ টাকা ঘুষ দিতে চান তিনি। ওই যাত্রী ছিলেন পুলিশের এক সহকারী উপ-পরিদর্শক রবিউল ইসলাম। পরে স্ক্যানার অপারেটর ও দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে তাকে ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কাছে হস্তান্তর করে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। 

বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, অভিযুক্ত রবিউলকে এ ঘটনা থেকে রেহায় দিতে ৫ লাখ টাকাকে ৫০ হাজার টাকা বলে সাদা কাগজে লিখে বাকি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে এসআই তাজের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে রবিউলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার জন্য সুপারিশ করেছে জেলা পুলিশ। কিন্তু অভিযুক্ত এসআই তাজের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যার ফলে নিয়মিত চাঁদাবাজি করে যাচ্ছেন তাজ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক সারোয়ার আলম বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। মূলত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত শেষে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

রোববারও (২৯ জানুয়ারি) পর্যটকদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে এসআই তাজের বিরুদ্ধে। কক্সবাজার বিমানবন্দর দিয়ে পর্যটকদের অতিরিক্ত লাগেজ বা মালামাল বেশি থাকলে কৌশলে টাকা দাবি করেন তাজ। না দিলে তল্লাশির নামে হয়রানি শুরু করেন। যা নিত্যদিনের ঘটনা। যা নিয়ে বিব্রত বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা জানান, তাজের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত অভিযোগ আসছে। যাত্রীদের নানাভাবে হয়রানি করছে। আসলে আমাদের বিমানবন্দরের জন্য আলাদা বাহিনী প্রয়োজন। এসব দিয়ে কখনো সুশৃঙ্খল কিছু করা সম্ভব নয়। 

জানা যায়, ঢাকা যাচ্ছিলেন সামিয়া ও তাসনিম জাহিদ দম্পতি। দুইদিন ধরে কক্সবাজারে ছিলেন। যাবার পথে অতিরিক্ত লাগেজ থাকার অজুহাতে গেইটেই তাদের হয়রানি শুরু করেন এসআই তাজ। একপর্যায়ে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার হুমকিও দেন তিনি। 

আরেক যাত্রী জসিম মাহমুদ। নিয়মিত যাতায়ত এ রুটে। প্রতিনিয়ত এসআই তাজের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। টাকা না দেওয়ায় তাকেও প্রতিদিন নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। 

শুধু পর্যটক নয়, স্থানীয় বাসিন্দা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ প্রতিনিয়ত তাজের হয়রানির শিকার। কোনো প্রতিকার চেয়েও সমাধান আসছে না। কয়েকদফা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও কোনো সুরাহা আসেনি। এর আগে এসব ঘটনায় মুচলেখা দিয়েছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করে এসআই তাজ। 

তবে ৮ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক এসপি ফজলে রাব্বী জানান, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাইদুল ফরহাদ/ আরকে