নরসিংদীর রায়পুরায় বিদ্যালয় বন্ধ রেখে শিক্ষকদের কক্সবাজার ভ্রমণের বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে। এতে রোববার ও সোমবার (২৯-৩০ জানুয়ারি) দুই দিন স্কুল বন্ধ রেখে উপজেলার মাহমুদাবাদ রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) স্কুল চলার নির্ধারিত সময়ে গিয়ে দেখা গেছে বিদ্যালয়ে পাঠদানের বদলে বিদ্যালয়ের দরজায় ঝুলছে তালা।

পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ও নরসিংদী-৫ রায়পুরা সংসদীয় আসনের ছয় বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর নামে উপজেলার মাহমুদাবাদ এলাকায় ২০০০ সালে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন রাজুর সহধর্মিণী কল্পনা রাজিউদ্দিন।

অভিযোগ রয়েছে সভাপতি কল্পনা রাজিউদ্দিনের নাম ভাঙ্গিয়ে বিদ্যালয়টিতে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই নিজ ইচ্ছা মতো বিদ্যালয় পরিচালনা করছেন প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ফারুক মিঞা। তার ভয়ে অন্যান্য শিক্ষক ও উপজেলার শিক্ষা অফিসার পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক সদস্য জানান, স্কুল বন্ধ রেখে ঘুরতে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। এটা স্কুল কর্তৃপক্ষ করতে পারেন না। এতে করে শিক্ষার্থীরা প্রকৃত পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটা এক ধরনের গর্হিত কাজ।

আরেকজন অভিভাবক বলেন, স্কুল প্রধান এবং অন্যরা ঢালাওভাবে স্কুল বন্ধ করে কোনো কিছু করার ইখতিয়ার আছে বলে আমি মনে করি না।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ফারুক মিঞার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি কক্সবাজার ঘুরতে গেছেন এমনটা স্বীকার করে বলেন, সরকার নির্ধারিত তিনদিনের সংরক্ষিত ছুটি থেকে দুইদিন ব্যয় করেছি। আর এ সফরে আমাদের সঙ্গে স্কুলের সব শিক্ষকরাও রয়েছেন।

ঘুরতে যাওয়ার বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা অবগত রয়েছেন কি না বা তাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বিষয়টি সুকৌশলে এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ঈদের ছুটি/পূজার ছুটি যে রকম এটা তো ওই রকমই। এটা চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকও নিতে পারেন।

উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সামালমগীর আলম বলেন, উনি আমাদের কাউকে কিছু না বলে ও অনুমতি না নিয়েই নিজ ইচ্ছামতো কাজ করছেন। ওনার বিরুদ্ধে এটা ছাড়াও অনেক অভিযোগ রয়েছে। যে ছুটিটি উনি নিয়েছেন সেটি তিনি নিতে পারেন, কিন্তু এটার একটা প্রক্রিয়া রয়েছে। তিনি সে প্রক্রিয়াটি না মেনেই কাজ করেছেন।

তন্ময় সাহা/এফকে