যশোরের অভয়নগরে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের সইতে না পেরে বাবার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতে বলতে সুমাইয়া বেগম (২২) নামে এক গৃহবধূ ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার রাজঘাট রেলক্রসিংয়ের পাশে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত সুমাইয়া বেগম উপজেলার বাঘুটিয়া গ্রামের রকি শেখের স্ত্রী এবং খুলনার ফুলতলা উপজেলার বেজেরডাঙা গ্রামের মহিরুল ইসলামের মেয়ে।

সুমাইয়ার বাবা মহিরুল ইসলাম বাবলু বলেন, তিন বছর আগে রকির সঙ্গে সুমাইয়ার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুই বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর বিভিন্ন সময়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। আমি তাদের এক লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়েছি। তারপরও তারা আমার মেয়েকে নির্যাতন করতো। গত বছর গলায় ছুরি দিয়ে আমার মেয়েকে রকি মেরে ফেলতে গিয়েছিল। আমি সংবাদ পেয়ে মেয়েকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি এবং মামলা করি। পরে সুমাইয়ার শ্বশুরবাড়ির এলাকার লোকজন আমার বাড়িতে এসে আলোচনা করে মামলা মীমাংসা করে মেয়েকে আবার নিয়ে যায়। এরপর থেকে ওর স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন পূর্বের মতো নির্যাতন চালিয়ে যেতে থাকে। নির্যাতন সইতে না পেরে সে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

তিনি আরও বলেন, সুমাইয়া আত্মহত্যার আগে আমার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলছিল। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনের কথা বলছিল। তখন প্রায় দুপুর ১২টা বাজে। আমি তাকে মোবাইলে বারবার শান্ত হওয়ার অনুরোধ করছিলাম। সে আমাকে বলেছিল বাবা তোমার নাতিকে দেখে রেখো। তখন মোবাইলে আমি ট্রেন আসার শব্দ শুনছিলাম। হঠাৎ একটি শব্দ শুনলাম। এরপর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। একটু পর জানতে পারি সে ট্রেনের ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

যশোর রেলওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান বলেন, খুলনাগামী বেতনা এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে গৃহবধূ সুমাইয়া মারা গেছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

এ্যান্টনি দাস অপু/আরএআর