বাউফলের কেশবপুর ইউনিয়নের এক জনপ্রতিনিধি এবং এক চৌকিদারের কাছে জিম্মায় রাখা নূন্যতম ৫ টন ওজনের একটি জলযান কার্গো স্থানীয় রাঘব বোয়ালরা মেশিন দিয়ে কেটে বিক্রি করে দিয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় তুমুল হৈচৈ পড়ে গেছে। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজের চেষ্টা করছে ওই রাঘব বোয়ালরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাউফল পৌরসভার জাহিদ নামের এক দোকানদার ৪ লাখ টাকায় ৪৮ হাত দৈর্ঘ্য এবং ১২ হাত প্রস্থের একটি কার্গো কিনে বরিশালের লাহারহাট এলাকার জাফর নামের এক ব্যক্তির কাছে মাসিক ২২ হাজার টাকায় ভাড়া দেন।

২০১৯ সালে তেঁতুলিয়া নদীর কেশবপুর পয়েন্টে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন থেকে চুরি করা আনা ১৪টি মহিষসহ ওই কার্গোটি আটক করেন কেশবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন লাভলু। আটকের সময় চোরের দল মহিষসহ কার্গোটি ফেলে পালিয়ে যায়।
এরপর স্থানীয় চেয়ারম্যান বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশকে জানালে তারা মহিষ মালিকদের ডেকে এনে ফেরত দেন এবং কার্গোটি কেশবপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার শাহজাহান গাজী ও স্থানীয় চৌকিদার রিপনের জিম্মায় রাখেন।

এ দিকে প্রশাসন ও পুলিশকে কিছু না জানিয়ে গত ৩ এবং ৪ ফেব্রুয়ারি মেম্বার শাহজাহান গাজীর নেতৃত্বে একটি রাঘব-বোয়ালের দল ৪টি গ্যাস সিলিন্ডারের সংযোগে কার্টার মেশিন দিয়ে কার্গোটির সকল লোহার প্লেটগুলো কেটে বিক্রি করে দেয়। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে বাউফল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে সামান্য কিছু প্লেট রেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা পালিয়ে যায়।    

স্থানীয়রা জানান, কার্গোটিতে নূন্যতম ৫ থেকে ৬ টন লোহার প্লেট ছিল। যার বর্তমান মূল্য ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা। মেম্বার শাহজাহান গাজী একাধারে ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি এবং বর্তমানে শ্রমিক লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। স্থানীয়রা ওই মেম্বারকে সুযোগবাদী মেম্বার বলে জানেন। ওই মেম্বারের বিরুদ্ধে ইলিশ শিকার নিষেধাজ্ঞার সময় বিভিন্ন জেলেদের দাদন দিয়ে অবৈধভাবে ইলিশ শিকার করানোর অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তার অনুসারীদের নিয়ে অবৈধভাবে তেঁতুলিয়া নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে লাখ লাখ টাকার বালু উত্তোলণ করে বিক্রি করে যাচ্ছেন। যা বর্তমানে চলমান। তার বাহিনীর ভয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না।    

এ ব্যাপারে মেম্বার শাহজাহান গাজী বলেন, কে বা কাহারা কার্গোটির লোহার প্লেটগুলো কার্টার দিয়ে কেটে নিয়েছে তা আমি জানি না।

বাউফল থানা পুলিশের ওসি মো. আল মামুন জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে কিছু মালামাল জব্দ করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নিতে ঘটনার তদন্ত চলছে।

আরিফুল ইসলাম সাগর/এমএএস