নারায়ণগঞ্জে তিন শিশুর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ২
নারায়ণগঞ্জে কারখানার যন্ত্রাংশ চুরির অভিযোগে তিন শিশুর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় গোপালদী পৌরসভার মেয়র হালিম শিকদারসহ চার জনের নাম উল্লেখ করে আড়াইহাজার থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় মেয়র হালিম শিকদারের নির্দেশে চুল কেটে দেওয়া দুই সহোদর নরসুন্দরকে (নাপিত) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোপালদী পৌরসভার মেয়রকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে নির্যাতনের শিকার মাদ্রাসা এক শিক্ষার্থীর বাবা আড়াইহাজার থানায় শিশু আইনের ৭০ ধারায় মামলা (মামলা নং ০৭/০২/২০২৩) দায়ের করেন।
বিজ্ঞাপন
গ্রেপ্তাররা হলেন— আড়াইহাজার উপজেলার রামচন্দ্রদী এলাকার মৃত জীবন শীলের ছেলে দ্বীপক শীল ও তার ছোট ভাই উৎপল শীল।
ওই ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-পরিচালক আনোয়ার হোসেনকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির দায়িত্বে থাকা আনোয়ার হোসেন মামলার ১নং আসামি হালিম শিকদারকে এলাকায় পেলেও পুলিশের চোখে তিনি পলাতক আসামি। মেয়রকে আইনের আওতায় আনতে দিনব্যাপী অভিযান চালিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি বলে দাবি আড়াইহাজার থানা পুলিশের। এদিকে নির্দেশদাতা হালিম শিকদার এলাকায় ঘুরে বেড়ানোর পরও তাকে আইনের আওতায় না নেওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক হাওলাদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, চুরির অপবাদে চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় নির্যাতনের শিকার এক শিশুর বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। ওই মামলায় চুল কেটে দেওয়া দুই নাপিত দ্বীপক ও উৎপলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মেয়র হালিম শিকদার ও অপর আসাইম ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তারে দিনব্যাপী অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। তারা পলাতক থাকায় আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি।
ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কর্মকর্তা মেয়র হালিম শিকদারকে সঙ্গে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে, কিন্তু আপনি বলছেন তিনি পলাতক। মেয়রকে গ্রেপ্তারে কোনো বিধিনিষেধ আছে কি না— জানতে চাইলে ওসি কিছুক্ষণ নীরব থাকেন। পরে তিনি বলেন, আইনের দৃষ্টিতে সব অপরাধী সমান। আমরা তাকে খুঁজে পাইনি, তিনি পলাতক আছেন।
এদিকে মামলায় অভিযুক্ত ১নং আসামি গোপালদী পৌরসভার মেয়র হালিম শিকদারের সঙ্গে রাত ৯টায় কথা হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি মামলার ব্যাপারে শুনেছি, তবে নিশ্চিত নই। অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে জানান, তিনি এলাকাতেই আছেন। জেলা প্রশাসনের তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন বলেও জানান।
প্রসঙ্গত, সোমবার সকালে তিন মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে চুরির অপবাদে রশি দিয়ে বেঁধে পুরো গ্রাম ঘুরিয়ে বাজারে নিয়ে চুল কেটে দেন মেয়র হালিম শিকদার।
আবির শিকদার/এসএসএইচ/