পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে ময়মনসিংহের ভালুকায় প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম বাণিজ্যিক কুমিরের খামার রেপটাইলস ফার্ম। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার হাতিবেড় গ্রামে কুমিরের খামারে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পর্যটন কেন্দ্রের উদ্বোধন করে উচ্চ আদালত থেকে নিয়োগ পাওয়া পরিচালনা পরিষদ। 

রেপটাইলস ফার্ম লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড. নাইম আহমেদ বলেন, মুখ থুবড়ে পড়া খামারটির দায়িত্ব নেওয়ার পর ১ হাজার ৭৩০টি কুমির অসুস্থ পাই। তখন প্রতিদিনেই মারা যাচ্ছিল কুমির। সেই সংকট কাটিয়ে আমরা এখন একটু ঘুরে দাঁড়িয়েছি। যেহেতু কুমিরের চামড়া ছাড়া মাংস দাঁত হাড় রপ্তানি করা যায় না, সেহেতু খরচ চালানো একটু কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই পর্যটন চালুর এই উদ্যোগ। পর্যটন খাত থেকে যা আয় হবে তা দিয়ে কুমিরের খাবারের অনেকটা ব্যবস্থা হবে। বর্তমানে খামারটিতে আড়াই হাজারের মতো কুমির রয়েছে। 

ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কুমির বিশেষজ্ঞ এনাম হক জানান, এই কুমির খামারটিকে বিশ্বের অন্যতম খামার হিসাবে আমরা গড়ে তুলতে চাই। পর্যটনের পাশাপাশি এখানে একটি রিসার্স সেন্টারও করা হবে।

ফার্মের ব্যবস্থাপক ডা. আবু সাইম মোহাম্মদ আরিফ জানান, পর্যটকদের জন্য প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কুমিরের খামারটি উন্মুক্ত থাকবে। টিকিটের প্রবেশ মূল্য ধরা হয়েছে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ১৫০ টাকা, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ১০০ টাকা। শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ছাড় রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালে ময়মনসিংহের ভালুকায় ১৫ একর জায়গার ওপর গড়ে তোলা হয় দেশের প্রথম বাণিজ্যিক কুমিরের খামার রেপটাইলস ফার্ম। খামারের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন মুশতাক আহমেদ। আর ৩৬ শতাংশ মালিকানা নিয়ে সঙ্গে ছিলেন মেজবাহুল হক। তিনি ২০১২ সালে খামারের শেয়ার ছেড়ে দিলে মালিকানায় চলে আসেন প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার। এরপর থেকেই খামার দেখিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ বের করে নেন পিকে হালদার। ২০২০ সালে সরকার পিকে হালদার ইস্যুতে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করলে হুমকিতে পড়ে কুমিরের পরিচর্যা। 

পরে ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর উচ্চ আদালতের নির্দেশে ড. নাইম আহমেদকে চেয়ারম্যান করে ছয় সদস্যের পরিচালনা বোর্ড গঠন করা হয়। এই বোর্ড ২০২২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি খামারের কার্যক্রম শুরু করে।

উবায়দুল হক/আরএআর