শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পাবনা মেডিকেল কলেজ থেকে খুলে নেওয়া জাতীয় পতাকা ফের টাঙিয়ে দিয়েছেন ম্যাজিস্ট্রেট। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে কলেজে টাঙানো জাতীয় পতাকা ছেঁড়া থাকায় তা খুলে নিয়ে যান জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আতিয়ুর রহমান। 

এর প্রতিবাদে দুপুরে কলেজের প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিকেলে ভুল স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেট নিজেই কলেজে এসে ফের পতাকা টাঙিয়ে দিলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।

এ বিষয়ে পাবনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আতিয়ুর রহমান বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা যাতে অবমাননা না হয়-  মনিটরিং করার জন্য টিম গঠন করা হয়েছিল। আমরা বিষয়টি মনিটরিং করছিলাম। পাবনা মেডিকেল কলেজে গিয়ে দেখি জাতীয় পতাকার রঙ ডিসকালার হয়ে গেছে। ছেঁড়া ও ব্যবহারের অনুপযোগী। এজন্য পতাকা নামিয়ে নিয়েছি। তবে এভাবে পতাকা নামানো ঠিক হয়নি। কলেজ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পতাকা সরিয়ে নিলে ভালো হতো। সময় স্বল্পতার কারণে এটা করা হয়েছে। তবে এটা খারাপ উদ্দেশ্যে করা হয়নি। সামান্য একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। আমরা এখন ঠিক করে নিয়েছি। নতুন পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শহীদের সম্মানে ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা টাঙানো হয়েছিল। কিন্তু সকালে একজন ম্যাজিস্ট্রেট এসে পতাকা খুলে ফেলেন। সকল বিধি মোতাবেক পতাকা টাঙানো হলেও ম্যাজিস্ট্রেট তা খুলে নিয়ে যান। এর প্রতিবাদে আমরা কলেজের ভবনে তালা দিয়েছি। 

এদিকে বিকেলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অভিযুক্ত জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আতিয়ুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল আসেন‌ পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর আলম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলম। কলেজ কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার পর ভুল স্বীকার করে ফের পতাকা উত্তোলন করে দেন অভিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেট।‌ পরে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। 

পাবনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ ইবনে আলী বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে আমাদের অনুষ্ঠান চলছিল। এ সময় একজন ম্যাজিস্ট্রেট এসে ক্যাম্পাসে টাঙানো পতাকা ছেঁড়া ও রং ঠিক নেই বলে পতাকা খুলে ফেলতে বলেন। তার নির্দেশে এক কর্মচারী পতাকাটি খুলে ফেললে তিনি সেই পতাকা নিয়ে চলে যান। এ ঘটনায় পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা আমাদের কলেজের ভবনে তালা ঝুলিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।

রাকিব হাসনাত/আরএআর