আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ফুল দিতে বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে জুতা পায়ে ওঠে পড়লেন প্রধান শিক্ষক। একই সঙ্গে ওঠেন তিনজন সহকারী শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকের পায়ে জুতা, সহকারী শিক্ষকদের পায়ে জুতা নেই। এমনই একটি ছবি ভাসছে ফেসবুকে। যা নিয়ে চলছে সমালোচনা। তবে, প্রধান শিক্ষক তার পায়ের সমস্যাজনিত কারণে জুতা খোলেননি বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। 

মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নের মহেশপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। জুতা পায়ে অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম মহেশপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। 

স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মহেশপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন বিদ্যালয়ের তিনজন সহকারী শিক্ষক। এসময় পায়ের জুতা না খুলেই শহীদ বেদিতে ওঠে পড়েন প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম। সেই ছবি তুলে কে বা কাহারা ফেসবুকে পোস্ট দেন। এরপরই জুতা পায়ে শহীদ বেদিতে ফুল দেওয়ার ছবিটি ফেসবুকে ভাসতে থাকে। এ ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন ভাইরাল শিক্ষক নজরুল ইসলাম। 

মহেশপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০০৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী কবির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম আমারও শিক্ষক। উনার ফেসবুকে পায়ের অর্ধেক পর্যন্ত ছবি দেখেছি। কিন্তু বেশ কিছু আইডিতে পুরে পায়ের ছবি দেখা গেছে। তিনি জুতা পায়েই বেদিতে ওঠেছেন এবং জুতা পরেই ফুল দিচ্ছেন দেখা যায়। এটা ঠিক নয়। তিনি যত বড় মানুষই হন, জুতা পায়ে শহীদ বেদিতে ওঠে তিনি ভাষা শহীদদের অপমান করেছেন। 

জহিরুল ইসলাম নামের ২০০৯ ব্যাচের এক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফেসবুকে ছবিটি দেখে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি যদি এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ করেন তাহলে আমাদের আর বলার ভাষা থাকে না।

অভিযুক্ত শিক্ষক নজরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি গত কয়েকদিনের ধরে অসুস্থ। পায়ের সমস্যাজনিত কারণে জুতা খুলতে পারিনি। যার কারণে জুতা পরেই শহীদ বেদিতে ওঠতে হয়েছে। আপনারা (সাংবাদিকরা) বিষয়টি স্কিপ করে গেলে ভালো হয়।

এ বিষয়ে দেবিদ্বার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাজী ওয়াহেদ সালেহকে একাধিকবার ফোন করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। 

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সাবেক সভাপতি আলমগীর খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, একজন শিক্ষক হবেন সবার জন্য অনুকরণীয়। তিনি যদি একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান হয়ে এমন কাজ করেন, তাহলে শিক্ষার্থীরা কী শিখবে? এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করছি।

দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডেজী চক্রবর্তী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফেসবুকে ছবিটি দেখার পর বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানাতে বলেছি। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে। 

আরিফ আজগর/এমএএস