‘আমার নাম হাসিনা, প্রধানমন্ত্রীর নামও হাসিনা। এরলাইগ্যা খুব আনন্দ লাগে। প্রধানমন্ত্রী আমরার হাওরে আইতাছে এইডা হুইনা আমরার খুব আনন্দ অইতাছে। আমহেরা আইছুই এই উছিলা আমহেরারেও দেখাছি। আমহেরাও আমরারে দেখতাছুইন। আমরা কই ফাইলাম অইলে আমহেরারে দেখতে। প্রধানমন্ত্রীরে দেখতারবাম এর লাইগ্যাইতো আমরার আনন্দ লাগতাছে। প্রধানমন্ত্রীরে দেখতাম যাইয়্যাম মাঠে। অনেক আনন্দ লাগতাছে। এতদিন প্রধানমন্ত্রীরে শুধু টিভিতে দেখছি। এইবার বাস্তবে দেখবাম।’

কথাগুলো বলছিলেন কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইন সদরের শান্তিপুর গ্রামের গৃহবধূ হাসিনা আক্তার। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর মিঠামইন সফরের কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের খবরে উচ্ছ্বসিত হাওরবাসী।  

গৃহবধূ হাসিনা আক্তার আরও বলেন, ‘আমরার হওর তেহে শহর যাইতে গাঙ্গ ও ফেরি পার অওন লাগে। প্রধানমন্ত্রী যদি আমরার শান্তিপুর ফেরি ঘাডে একটা ব্রিজ কইরা দেয় তাইলে গাঙ্গ ও ফেরি পার অওন লাগদনা। আমরার জন্য অনেক ভালাই অইব। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী অইয়া আমরার হাওরে রাস্তা-ঘাট কইরা দিছে। আমরার সুখ-সুবিধা অইছে। হাওরে এই রাস্তা-ঘাট অওনে গাড়ি দেখছি। বেড়িবান কইরা দেওয়ায়ও আমরার সুখ-সুবিধা অইছে। সবই প্রধানমন্ত্রী হাসিনা কইরা দিছে।’

ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিফ মিয়া বলে, আমাদের এলাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসবেন, আমরা খুব খুশি। প্রধানমন্ত্রীকে সব সময় আমরা টিভিতে দেখি, এবার সরাসরি দেখতে পারব। তাই আমরা খুব খুশি। ওইদিন আমাদের স্কুল বন্ধ, আমরা যাব দেখতে।

মিঠামইন সদরের শান্তিপুর গ্রামের কৃষক আবদুর রশিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের হাওরে দ্বিতীয়বার আসছেন। প্রধানমন্ত্রী আমাদের হাওরে যে উন্নয়ন করেছেন তাতে আমরা খুশি। সারাদেশে যে উন্নয়ন করেছেন তার চার ভাগের এক ভাগ এই হাওরেই করেছেন। হাওরে অলওয়েদার সড়ক করে দিয়েছেন। হাওরে ক্যান্টনমেন্ট করেছেন। হাওরে উড়াল সড়ক হবে। আমাদের হাওরের অনেক উন্নয়ন করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করি তিনি দীর্ঘজীবী হোন। সামনের নির্বাচনেও যেন তিনি পাস করে প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন সেই দোয়াও করি।

ইটনা ঋষিপাড়া এলাকার নির্ধন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমরার হাওর এলাকায় প্রধানমন্ত্রী আসছেন। খুব ভালো লাগছে। উনি আমরার হাওরে খুব উন্নতি করছেন, তাই আমরা খুব খুশি। বেড়িবান দিছেন, রাস্তা-ঘাট কইরা দিছেন ও অফিস আদালত কইরা দিছেন, সব কইরা দিছেন। আর কোনো চাওয়া নাই। আমরা গরিব মানুষ যে শান্তিতে থাকতাছি, তাতেই খুশি।’

কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক জানান, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি মিঠামইন সফরের বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। এ সফরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল হামিদ সেনানিবাস উদ্বোধন করবেন। এছাড়াও মিঠামইনে জনসভায় হাওরের উন্নয়ন-কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর এ সফরকে কেন্দ্র করে হাওরের নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে বর্ষা মৌসুমে মিঠামইনে এসেছিলেন। তখন উনার হেলিকপ্টার নামানোর মতো জায়গাও ছিল না। ওই সময়ে উপজেলা হাসপাতালের সামনে গাছ কেটে হেলিকপ্টার নামানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেখন থেকে সভা মঞ্চে যাওয়ার জন্য দুটি নতুন রিকশা কিশোরগঞ্জ থেকে আনা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর কারণেই এক সময়ে অবহেলিত হাওরে উন্নয়ন হয়েছে। আমার বিশ্বাস তিনি নিজেই অভিভূত হয়ে যাবেন।

এসকে রাসেল/আরএআর