যশোরে বাজারে নতুন রেকর্ড গড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। পিছিয়ে নেই খাসি এবং গরুর মাংসের দাম। খামারিরা মুরগির সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় গত ৫ দিনের ব্যবধানে কেজি প্রতি ৮০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগির দাম হয়েছে ২৩০ টাকা।

সরেজমিনে বুধবার (১ মার্চ) সকালে যশোরের বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, পালবাড়ি মোড় কাঁচাবাজার, ধর্মতলা ও পুলেরহাট কাঁচাবাজারে মাংসের দোকানগুলো ঘুরে এ তথ্য জানা যায়।

ব্যবসায়ীরা জানান, বুধবার ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ২৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। খামারিরা ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় বাজারে এমন অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করছেন তারা।

চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেন বলেন, গত ৫ দিন আগে ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি বিক্রি করেছি ১৫০ টাকা। গত দু-তিন দিন ধরে বিক্রি করতেছি ২৩০ টাকা করে। বড় বড় খামারিদের খামারে মুরগি না থাকায় তারা বাজারে মুরগি সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। ফলে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে চলেছে। এটা ব্রয়লার মুরগির বাজারে রেকর্ড বলা যায়। 

বড়বাজার কাঠেরপুল এলাকার মাংস ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলী বলেন, গরু বিক্রি করছি প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা করে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৯৫০ থেকে ১ হাজার টাকা করে। গরুর ও খাসির মাংসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রয়লার মুরগির দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ এবং বিভিন্ন মেস, ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা মাংস কিনতে এসে হিমশিম খাচ্ছেন। 

কথা হয় রিকশা চালক বাইজিদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি ভাড়ার রিকশা চালিয়ে দিনে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা উপার্জন করি। এই টাকা ৫ সদস্যের পরিবারের খাওয়া খরচ এবং ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার পেছনে ব্যয় করতে হয়। গরু ও খাসির মাংস আমাদের কাছে এখন স্বপ্ন। আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের শেষ ভরসা ছিল ব্রয়লার মুরগির মাংস। সেটার দামও এখন ঊর্ধ্বগতি। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। মুরগি একটা ওজন দিলে দাম হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। মুরগিও এখন আমাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। 

ধর্মতলা এলাকার মেসের শিক্ষার্থী আলভি রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মেসে গরুর ও খাসির মাংসের কথা চিন্তাই করা যায় না। সচরাচর ব্রয়লার মুরগি দেওয়া হত। সেটারও যা দাম বেড়েছে তাতে এখন মেসের বাজার করতে এসে অনেকে মাংস না কিনে ফিরে যাচ্ছে। আবার অনেকে মাংস কিনতে গিয়ে অন্যান্য কাঁচাবাজার কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। বর্তমানে বাজার তদারকির প্রয়োজন। 

এ বিষয়ে যশোর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ওয়ালিদ বিন হাবিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ব্যস্ত আছি। পরে কথা বলব।

এ্যান্টনি দাস অপু/আরকে