বইমেলার প্রথম দিন থেকেই পাওয়া যাবে কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক রকিবুল ইসলাম মুকুলের জীবনঘনিষ্ঠ উপন্যাস ‘শিশমহল’। শুধু অমর একুশে গ্রন্থমেলা নয়, পাঠক তৈরি ও বিপর্যস্ত সমাজকে সংস্কৃতিচর্চার সঙ্গে রাখার আন্দোলনে সারা বছর বই প্রকাশের অংশ হিসেবে গেল নভেম্বরে প্রকাশিত হয় উপন্যাসটি। উপন্যাসটি প্রকাশ করেছে খ্যাতনামা প্রকাশনী ‘অনন্যা’। প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ।

সমকালীন এ উপন্যাসটিতে করোনা মহামারিকালে মানুষের মনস্তত্ব, ঘরবন্দি জীবন থেকে সাম্প্রতিক কালের সামাজিক অবক্ষয়, অস্থিরতাসহ নানা অসংগতির বিষয় উঠে এসেছে। উপন্যাসে গ্রাম থেকে শহর, শহর থেকে গ্লোবাল ভিলেজ, শিকড়ের টান, সামাজিক দায়বদ্ধতা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি থেকে শুরু করে মনোজগতে ঘটে যাওয়া দহনকালের বর্ণনা তুলে এনেছেন ঔপন্যাসিক। উপন্যাসটি পাঠককে টেনে নিয়ে যাবে তার জগতে। পাঠকের মনে হতে পারে― এ যেন চিরচেনা পটভূমির চেনা গল্প, এ যেন নিজের গল্প।

উপন্যাসের পটভূমি
প্রকৃতি ও প্রাণীর সঙ্গে বেড়ে ওঠা অধ্যাপক জয়েন উদ্দিনের। উঠোনে খড়ের পুঞ্জ, গোয়ালঘরে গরু-ছাগলের লাদি থেকে ভেসে আসা গ্রামীণ সুবাস। পাশেই  শিম, শসা ও লাউয়ের মাঁচা; তালপুকুর, বিস্তীর্ণ ধানখেতে জমে থাকা টলটলে পানিতে খুদে পানার সবুজের মধ্য থেকে ভুরভুর করে উঠে আসা বুদবুদ। সেখানে দল বেঁধে সাঁতার কাটে টাকি, পুঁটি ও খলসে মলা মাছ। জয়েন উদ্দিন খেতখামারের আল ধরে হাঁটেন, ফুসফুস ভরে নেন বিশুদ্ধ বাতাস। শতবর্ষী ছাইতনগাছের গোড়ায় হেলান দিয়ে বসে স্মৃতির জাবর কাটেন।

জয়েন উদ্দিনের পরিবারের প্রেম, বিরহ, সংকট, উত্থান ও পতনের চেনা গল্পটা আবর্তিত হয় গ্রাম থেকে শহরে। সমাজবদলের স্বপ্নে বিভোর জয়েন উদ্দিনের চোখের সামনেই ঘটতে থাকে একের পর এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। চরম মানসিক অস্থিরতা, হতাশা, লোভ, আর বিকৃতিতে ভরপুর সমাজের মানুষগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় মেকি সভ্যতার কাচের প্রাসাদ বা শিশমহল ভেঙে খানখান হয়ে যাওয়ার দৃশ্যাবলি।

শিশমহলের কাহিনি আবর্তিত হয় একজন অধ্যাপক জয়েন উদ্দিন ও তার আশপাশের পরিবারের চিরচেনা সাদামাটা দৈনন্দিন ঘটনাগুলো নিয়ে। মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর টানাপোড়েনের নিখুঁত ব্যবচ্ছেদের উপন্যাস শিশমহল এরই মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে রকমারি ডটকমসহ দেশের বই বিপণনকারী অনলাইন স্টোরগুলোতে। ১১২ পৃষ্ঠার উপন্যাসটির মূল্য ২০০ টাকা। বইটি পাওয়া যাবে গ্রন্থমেলায় অনন্যা প্রকাশনীর প্যাভিলিয়নেও।

অনন্যার স্বত্বাধিকারী ও প্রকাশক মনিরুল হক বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মানুষের হাতে বছরব্যাপী নতুন বই তুলে দিতে চাই। বই যেমন মানুষের মনের খোরাক মেটায়, তেমনি বই সমাজ গড়ে। মানুষের মনের চোখ খুলে দেয়। মানুষকে উদ্দীপ্ত করে, আলোকিত করে। সামাজিক অবক্ষয়ের চরম এই ক্রান্তিকালে মানুষের হাতে বই তুলে দিতে পারলে সমাজ আবার পুরোনো আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে।

মনিরুল আরও বলেন, রকিবুল ইসলাম মুকুল প্রতিশ্রুতিশীল লেখক। তার শিশমহল উপন্যাসটি পাঠকপ্রিয় হবে বলে আমার বিশ্বাস। এরই মধ্যে উপন্যাসটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পাঠকের হাতে পৌঁছাতে শুরু করেছে। পাঠকপ্রিয়ও হয়েছে। বইমেলায় উপন্যাসটি আরও বেশি পাঠকের হাতে পৌঁছে যাবে বলে আমরা মনে করি।

এনএ