রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) উপাচার্যের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে রাঙামাটি শহরের শাহ্ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) বিকেলে শাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষের সামনের মাঠে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন রাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। 

শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে তিন লাখ টাকা বরাদ্দের ভিত্তিতে শহরের মাঝেরবস্তী এলাকায় অবস্থিত রাবিপ্রবির অস্থায়ী আবাসিক হলটি সংস্কার করে দেওয়ার কথা ছিল। মঙ্গলবার বিকেলে রাবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. সেলিনা আক্তার হলের সংস্কার কাজ পরিদর্শনে আসেন। কিন্তু কাজের মান ভালো না হওয়ায় তিনি শাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমানকে ডেকে নিয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক উপাচার্যের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এতে করে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে শাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের মাঠে জড়ো হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন এবং প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান। 

রাবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ড. সেলিনা আখতার বলেন, আমরা শাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ছাত্রাবাস ভাড়া নিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য হল হিসেবে ব্যবহার করি। হলটির বাথরুমের অবস্থা ভালো না হওয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষ সংস্কারের দায়িত্ব নেয়। কিন্তু বাথরুমে ভালো টাইলস না লাগানো ও পুরোনো কমোড ব্যবহারের কারণ জানতে চাইলে তিনি আঙুল তুলে আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং রুম থেকে চলে যান। যাওয়ার পথে তিনি ছাত্রদেরও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এতে ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। 

অভিযোগের বিষয়ে শাহ্ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান বলেন, ভিসি (উপাচার্য) ম্যাম আমাকে ডেকে নেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সামনে প্রধান শিক্ষক হিসেবে আমার কোনো রুচিবোধই নেই বলে মন্তব্য করেন। এই মন্তব্য শোনার পরই আমি তাকে বলে তার রুম থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ভিসি ম্যামের উপস্থিতিতেই আমার ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে এবং আমাকে ভিসি ম্যামের কাছে ক্ষমা চাইতে বলে। কিন্তু আমি চলে আসি। আমি চলে আসার পরই ছাত্ররা আমার বিরুদ্ধে আপত্তিকর স্লোগান দিতে থাকে। 

এ ব্যাপারে রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল আমিন বলেন, শাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং রাবিপ্রবির ভিসির মধ্যে সামান্য একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ (সদর সার্কেল) প্রশাসনের উপস্থিতিতে এই ভুল বুঝাবুঝির অবসান হয়েছে। 

উল্লেখ্য, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৫ সাল থেকে ক্লাস শুরু হলেও এখনো নিজস্ব কোনো ছাত্রাবাস নেই। শহরের মাঝেরবস্তী এলাকায় শাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে একটি ভবন ভাড়া নিয়ে সেটিকে অস্থায়ী ছাত্রাবাস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

মিশু মল্লিক/আরএআর